শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

লক্কড়ঝক্কড় বাস

জিম্মি অবস্থার অবসান হোক

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু রাজধানীর গণপরিবহন বিশেষত বাসের ক্ষেত্রে দৃষ্টিগ্রাহ্য পরিবর্তন আসেনি। দেশের প্রাণকেন্দ্র রাজধানী ঢাকায় যেসব লক্কড়ঝক্কড় বাস চলাচল করে তা দক্ষিণ সুদান, সোমালিয়া, আফগানিস্তানের মতো ব্যর্থ রাষ্ট্রে চলাচলের অনুমতি পায় কি না সন্দেহ। অথচ ভাঙাচোরা লক্কড়ঝক্কড় বাসের অবাধ রাজত্ব চলছে ঢাকা নামের মেগাসিটিতে। সেগুলোর কোনোটির রং চটা, কোনোটির ছাল ওঠা। কোনোটির জানালার গ্লাস ভাঙা, কোনোটির আবার দরজাই নেই। কিছু বাসের আসনের অবস্থাও করুণ। অনেক বাসের ভিতরে প্রস্রাবের দুর্গন্ধ পাওয়া যায়, সিটে বাসা বেঁধেছে ছারপোকা। দিনের পর দিন এসব ভাঙাচোরা বাস রাস্তায় নামাচ্ছেন মালিকরা। লক্কড়ঝক্কড় বাসের ছাল-চামড়া খুলে পড়ছে। এসব বাসকে ফিটনেস সনদ দিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ। প্রতিদিন চোখের সামনে দেখেও রাস্তায় এসব বাস চলার অনুমতি দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। ফিটনেসবিহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ এসব যানবাহনে চলাচল যেমন বিপজ্জনক তেমনি নগরীর সৌন্দর্যহানিও ঘটাচ্ছে। বিশৃঙ্খলভাবে চলাচল করায় বাধছে যানজট। সরকারের নীতিমালা না থাকায় লক্কড়ঝক্কড় বাস চালু রাখার সুযোগ নিচ্ছেন বাস মালিকরা। দুই দশক আগেও রাজধানী ঢাকায় রুট অনুযায়ী গণপরিবহনের জন্য সুনির্দিষ্ট রং নির্ধারণ করত বিআরটিএ। সংস্থাটির নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বাসের রং উঠে গেলে সেটি চলাচলের অনুপযোগী হবে। বিআরটিএর সেই সার্কুলার পরবর্তী সময়ে নতুন করে জারি করা হয়নি। বর্তমানে রাজধানীর ২৯১টি রুটে চলাচলকারী বাসের অধিকাংশই এখন লক্কড়ঝক্কড় অবস্থায় চলছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন ঢাকার চেয়ে চট্টগ্রাম এবং মফস্বলে চলাচলকারী বাসের মান ঢের ভালো। এসব লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি দেশের উন্নয়ন ও অর্জনকে লজ্জা দিচ্ছে। মন্ত্রীর বক্তব্য প্রশংসাযোগ্য তবে এ বক্তব্য তাঁর এবং সরকারের দায় বাড়িয়েছে। লক্কড়ঝক্কড় বাস মালিকদের কাছে জিম্মি হওয়ার দুর্ভাগ্য ঠেকাতে সরকারকে কঠোর হতে হবে। যাদের যোগসাজশে অচল বাস চলাচল করছে তাদেরও ধরা দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর