মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিদেশমুখী প্রবণতা

দেশে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে

কাজের সন্ধানে বিদেশমুখী হওয়া নতুন কিছু নয়। এ প্রবণতা দেশের অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ বয়ে এনেছে। বিদেশে বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি মানুষ কর্মরত। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে প্রাণভোমরার ভূমিকা পালন করছে। তবে বিদেশে যারা কাজের সন্ধানে যেতেন তাদের সিংহভাগ ছিল বেকার জনগোষ্ঠী। একই সঙ্গে স্বল্প শিক্ষিত। অনেকের দৌড় বড়জোর অক্ষর জ্ঞান পর্যন্ত। অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে তারা বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। গত দুই দশকে উচ্চ শিক্ষিতদের মধ্যে কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে ব্যাপকভাবে। যাদের সিংহভাগের বিদেশমুখী হওয়ার পেছনে ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের উদ্দেশ্যও জড়িত। সোজা কথায় তাদের একাংশ কখনই দেশে ফিরবেন না। দেশে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগের অভাব, কর্মসংস্থানের অনিশ্চয়তা, নিম্নমানের জীবনযাপনসহ বেশ কয়েকটি বিষয়কে শিক্ষার্থীদের দেশ ছাড়ার কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে। ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাড়ি দিয়েছে মোট ৫২ হাজার ৭৯৯ জন শিক্ষার্থী। ২০১৩ সালে এ সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ১১২ এবং ২০০৮ সালে ১৬ হাজার ৬০৯। ২০২২ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশ ছাড়ে ৪৯ হাজার ১৫১ জন শিক্ষার্থী, যা তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে ছিল ৪৪ হাজার ৩৩৮। গত এক বছরে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গেছে ৮ হাজার ৫২৪ জন শিক্ষার্থী। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে ৬ হাজার ৫৮৬, কানাডায় ৫ হাজার ৮৩৫, মালয়েশিয়ায় ৫ হাজার ৭১৪ ও জার্মানিতে ৫ হাজার ৪৬ জন শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশ ছেড়েছে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় ৪ হাজার ৯৮৭, জাপানে ২ হাজার ৮২, প্রতিবেশী ভারতে ২ হাজার ৬০৬, কোরিয়া প্রজাতন্ত্রে ১ হাজার ২০২ এবং ১ হাজার ১৯০ জন শিক্ষার্থী সৌদি আরবে উচ্চশিক্ষার জন্য গেছে। বাংলাদেশ ঘনবসতির দেশ। কর্মসংস্থানের সুযোগও সীমিত। যে কারণে বিদেশমুখী প্রবণতা গড়ে উঠছে বাস্তবতার নিরিখে। অনেকে বিদেশমুখী হচ্ছে সৎভাবে জীবনযাপনের উদ্দেশ্যে। দেশে সে সুযোগ সৃষ্টি করা খুবই জরুরি।

সর্বশেষ খবর