স্বাধীনতার পর ৫৩ বছরে বাংলাদেশ নজর কাড়া সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। বিশ্বের এক সময়ের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া দেশকে এখন সম্ভাবনাময় অর্থনীতি হিসেবে বিবেচনা করছে অগ্রসর বিশ্ব। পাকিস্তান তো বটেই বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের জনপ্রতি আয় বেশি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, স্যানিটেশনসহ আরও অনেক সূচকে ৫৩ বছর বয়সে বহুদূর এগিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বিশ্ববাজারে আজ দারুণভাবে সমাদৃত। এক কোটির বেশি বাংলাদেশি অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ৯ বিলিয়ন থেকে মাত্র দেড় দশকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উঠেছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলারে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকা, যা আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ লাখ ৪১ হাজার ৪৭ টাকা। মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে কয়েক বছর ধরেই ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। অথচ দুই দশক আগেও ভারত ও পাকিস্তান বেশ এগিয়ে ছিল বাংলাদেশের চেয়ে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরের মধ্যেই মাথাপিছু জিডিপিতে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দুটি বড় শক্তি ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। এটি হলো মুদ্রার এক পিঠ। যে পিঠ উজ্জ্বলতায় ভরা। কিন্তু অন্য পিঠটি হতাশার প্রতিবিম্ব। অনিয়ম, দুর্নীতি, সম্পদের সুসম বণ্টনের অভাব এবং অদক্ষতায় দেশে ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়ছে ক্রমাগতভাবে। মাথাপিছু আয় বাড়লেও তার সুফল সেভাবে পাচ্ছে না শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ। ফলে নজর কাড়া উন্নয়নের প্রভাব মানুষের মনোরাজ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না। দানা বেঁধে উঠছে বঞ্চনার বিষয়। আমাদের স্বাধীনতা-সংগ্রামীদের লক্ষ্য ছিল একটি সুষম সমাজ গঠন করা। যেখানে ধনী-গরিবের আকাশ সমান পার্থক্য থাকবে না। বলা হয় পাকিস্তান আমলের ২২ পরিবারের বদলে ২২ হাজার পরিবারের কাছে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে সব সম্পদ।
এ অসুস্থাবস্থার অবসানে সরকারকে মনোযোগী হতে হবে।