রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিপন্ন কর্ণফুলী

দখল দূষণ রোধে সক্রিয় হোন

কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে একাকার হয়ে আছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পরিচিতি। রাজধানী ঢাকার আগেও এ নগরীর পরিচিতি ছিল বহির্বিশ্বে। কর্ণফুলীর অস্তিত্ব ক্রমান্বয়ে বিপন্ন হতে চলেছে দখল ও দূষণে। নদী দখল করে বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায়। দখল দূষণে এলাকার রাজনৈতিক টাউট এবং প্রভাবশালীরা প্রধানত দায়ী হলেও কম যাচ্ছে না সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০১৫ সালে চাক্তাই ও রাজাখালী খালে ১৪৭ দশমিক ১০ একর জায়গা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে ১৫ বছরের জন্য ইজারা দেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর পাশে কর্ণফুলী নদীর অংশে মাছ বাজারকে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ লাখ ৭৫ হাজার ২৬৩ বর্গফুট জায়গা। নগরীর কল্পলোক আবাসিক এলাকার পূর্ব পাশে এবং বোয়ালখালী ও শিকলবাহার পশ্চিম পাশে কর্ণফুলী নদীর মাঝখানে জেগে উঠেছে ৩৫ একর চর। গত বছরের নভেম্বরে এ চরে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র করার পরিকল্পনা নেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাছে অনাপত্তিপত্র চেয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের ২০২০ সালের জরিপ অনুযায়ী, শাহ আমানত সেতু এলাকায় জোয়ারের সময় নদীটির প্রস্থ ৫১০ মিটার ও ভাটার সময় ৪১০ মিটার। কিন্তু আগে ছিল ৮৮৬ মিটার। রাজাখালী খালের মুখে নদীর প্রশস্ততা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফিরিঙ্গি বাজার পয়েন্টে প্রস্থ ছিল ৯০৪ মিটার, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গাইড ওয়াল নির্মাণের পর সেখানে নদী আছে ৭৫০ মিটার। কর্ণফুলী রক্ষায় দখল ও দূষণের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার বিকল্প নেই। যেভাবে নদীর প্রস্থ কমছে তা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে প্রমত্তা এ নদী হয়তো খালে পরিণত হবে। নদীতে যে চর পড়েছে তা ড্রেজিং করে নাব্য ঠিক রাখার বদলে সেখানে বর্জ্যভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা চূড়ান্তভাবে আত্মঘাতী। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ প্রমাণ করেছে জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে কী ধরনের লোকজন পোষা হচ্ছে! কর্ণফুলী নদীকে গলা টিপে হত্যা করার এ অর্বাচীন কর্মকান্ড বন্ধ হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর