সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

কালো বিড়ালের থাবা

বনভূমি সুরক্ষায় ওদের থামাতে হবে

বন বিভাগ যেন ঘুষ-দুর্নীতির কালো বিড়ালের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। বছর যায় যুগ যায় কিন্তু কালো বিড়ালের দৌরাত্ম্য শেষ হয় না। পুরো বন বিভাগ কালো বিড়াল নামের দুর্নীতির কুশীলবদের কাছে জিম্মি। বন বিভাগের সৃষ্টি দেশের বনভূমি রক্ষার জন্য। যারা চাকরি করেন বন বিভাগে তাদের বেতন-ভাতা আসে দেশের ১৭ কোটি মানুষের ট্যাক্সের টাকা থেকে। দেশের প্রতি তাদের আনুগত্য থাকবে, দেশের সম্পদ বনভূমি রক্ষায় তারা অবদান রাখবেন এমনটিই ভাবা হয়। কিন্তু দেশবাসীর বদলে চোর-মহাচোরদের প্রতিই বন বিভাগের দু-একজন বাদে সিংহভাগের আনুগত্য। আর সে কারণে দেশের বনভূমি বাড়ার বদলে কমছে। সাধারণ কর্মচারী থেকে শীর্ষ কর্মকর্তা লুটেরা গোষ্ঠীর দুর্নীতি, অনিয়মে উজাড় হচ্ছে বন। নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্যের সিন্ডিকেট গড়েও চলছে লুটপাট। দুর্নীতি দমন কমিশনের হুঁশিয়ারি, নোটিসেও বন্ধ হচ্ছে না বন বিভাগের দুর্নীতি। ওয়ান-ইলেভেনের আলোচিত ‘বনের রাজা’ ওসমান গনির উত্তরসূরিরাই এখন বনের শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। তাদের ভয়াবহ অনিয়মে দেশের বনভূমি দিন দিন উজাড় হচ্ছে। লুটপাটের স্বার্থেই বনের বিভিন্ন পদ নিলামে ওঠে। সুন্দরবন, পার্বত্য এলাকার বড় পদগুলো নিয়ে চলে দরকষাকষিও। কোটি কোটি টাকার নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্যে শীর্ষ কর্মকর্তারা জড়িত থাকায় বন বিভাগে কায়েম হয়েছে লুটের রাজত্ব। বলা হয়ে থাকে, মহাখালীর বন ভবন আগাগোড়া এক দুর্নীতির আখড়া। ডিএফও থেকে বিট কর্মকর্তা পর্যন্ত সর্বস্তরে চলে ভয়াবহ বদলি-বাণিজ্য। বন রক্ষার নামে বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করে টাকা লুটপাটে ব্যস্ত থাকেন দুর্নীতির বরাহ সন্তানরা। ফলে এ বিভাগে কয়েক বছর চাকরি করেই অনেকে বাড়ি-গাড়ির মালিক বনে যাচ্ছেন। বাড়ি কিনছেন বিদেশেও। পাচার করছেন অবৈধ অর্থ। বলা হয়ে থাকে ওসমান গনির নাম সাধারণ্যে পরিচিতি লাভ করলেও এমন দুর্জনের সংখ্যা বন বিভাগে অসংখ্য বললেও খুব বেশি বলা হবে না। বন বাঁচলে দেশ বাঁচবে, বন বাঁচলে মানুষ বাঁচবে। পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখতে যেভাবেই হোক বনভূমি টিকিয়ে রাখতে হবে। বন বিভাগে ঠাঁই পাওয়া দুর্নীতিগ্রস্ত ইতরদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে সরকারকে।

সর্বশেষ খবর