সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঘুষ এবং দুর্নীতি

বিনিয়োগে প্রধান বাধা

বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী এটি একটি বহুল ব্যবহৃত প্রবচন। বাংলাদেশে রয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অমিত সম্ভাবনা। কারণ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধের ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি চীনের অবস্থান বাংলাদেশের সন্নিকটে। অন্যতম অর্থনৈতিক পরাশক্তি ভারত বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী। ১৭ কোটি মানুষের এ দেশ স্বল্পোন্নত তালিকা থেকে ইতোমধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে মধ্যম আয়ের দেশে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারও বিশাল। এ দেশের রয়েছে সস্তা জনশক্তি। যেখানে বিনিয়োগ করলে সহজেই লাভের মুখ দেখা সম্ভব। তারপরও বাংলাদেশে বিনিয়োগ খরা চলছে। পশ্চিমা বিনিয়োগ সত্যিকার অর্থে কম। এর পেছনে যেসব কারণ দায়ী তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে এক মার্কিন প্রতিবেদনে। তাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগে বাধা হিসেবে ঘুষ, দুর্নীতি, অস্বচ্ছতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দফতর প্রকাশিত ২০২৪ সালের বৈদেশিক বাণিজ্যে বাধাবিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘুষ ও দুর্নীতি বাংলাদেশের অনেক পুরনো সমস্যা। দুর্নীতিবিরোধী আইনের প্রয়োগও যথেষ্ট নয়। বাণিজ্যিক সমঝোতাগুলোর ক্ষেত্রে ঘুষ ও চাঁদা দেওয়ার অভিযোগ প্রচুর। রয়েছে অর্থ পাচারের অভিযোগও। যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করে আসছে। বাংলাদেশ জাতীয় ইলেকট্রনিক প্রকিউরমেন্ট পোর্টাল চালু করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদাররা বিভিন্ন দরপত্রে প্রত্যাশিত পণ্যের পুরনো কারিগরি মান নিয়ে উদ্বিগ্ন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বিনিয়োগ থেকে লভ্যাংশ বিদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার কথা যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা তুলে ধরেছে। বাংলাদেশ থেকে রেমিট্যান্স বিদেশে পাঠাতে আইনি জটিলতাও রয়েছে। শ্রম ইস্যুতে উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩ সালে জিএসপি পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দফতর প্রণীত প্রতিবেদনটিকে নিছক অভিযোগ বলার অবকাশ নেই। ঘুষ-দুর্নীতির ব্যাপ্তি থামাতে অভিযোগগুলো আমলে আনা দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর