শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

ধ্বংস যাদের অবধারিত

মুফতি রফিকুল ইসলাম আল মাদানি

ধ্বংস যাদের অবধারিত

মহান আল্লাহতায়ালার অসীম দয়া, ক্ষমা ও মানুষের পাপ মুক্তির এক সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে আসে রমজানুল মোবারক। রোজা মানুষের অভ্যন্তরীণ যাবতীয় হিংসা-বিদ্বেষ, অহংকার কুপ্রবৃত্তি ও নফসের দাসত্ব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। সোনা, রুপা আগুনে পোড়ালে খাঁটি হয়, তেমনি রমজানের দহনে সিয়াম সাধক পাপমুক্ত হয়ে জান্নাতি মানুষে পরিণত হয়। তাই পবিত্র রমজানে প্রত্যেক রোজাদার মুসলমানের একান্ত বাসনা হবে আল্লাহর ক্ষমা লাভ করা, আকাক্সক্ষা হবে তাকওয়া অর্জন করা এবং অন্যায়, মিথ্যা, অশ্লীলতা ও সব ধরনের দুর্নীতিমুক্ত জীবন গড়ার সাধনা চলবে। এ মাস পেয়েও যারা জীবনের মোড় পাল্টাতে পারেনি, লাভ করতে পারেনি জাহান্নাম থেকে মুক্ত হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ, তাদের ধ্বংস অবধারিত। তাদের জন্য রয়েছে জিবরাইল (আ.) এর অভিশাপ। আর এই ধ্বংসাত্মক দোয়ায় আমিন বলে সমর্থন দিয়েছেন মহানবী (সা.)। অথচ রহমতে আলম প্রিয় নবী (সা.) স্বাভাবিকভাবে কাউকে অভিশাপ দেন না। বদদোয়া করেন না তিনি চিরশত্রুর জন্যও। এক দিনের ঘটনা, রসুলুল্লাহ (সা.) মিম্বরে আরোহণকালে বলেন, আমিন, আমিন, আমিন। মিম্বর থেকে অবতরণের পর এ বিষয়ে মহানবী (সা.) কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) এসেছিলেন। আমি যখন প্রথম সিঁড়িতে পা রাখি তখন তিনি বলেন, যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েছে কিন্তু তার গুনাহগুলো মাফ করাতে পারেনি সে ধ্বংস হোক। আপনি বলুন আমিন। তখন আমি বললাম আমিন। (কবুল করুন)। অতঃপর যখন দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখি, তখন তিনি বলেন, যার কাছে আপনার নাম উচ্চারণ করা হয়েছে কিন্তু সে আপনার প্রতি দরুদ পাঠ করেনি সে ধ্বংস হোক। আপনি বলুন আমিন। তখন আমি বললাম আমিন। সর্বশেষে যখন আমি তৃতীয় সিঁড়িতে পা রাখি, তখন তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তার মাতা-পিতা উভয়জনকে অথবা তাদের কোনো একজনকে জীবিত পেয়েছে অথচ তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালো না সে ধ্বংস হোক। আপনি বলুন আমিন, তখন আমি বললাম আমিন। (আল কওলুল বাদীউ)। ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) পরপর উল্লিখিত তিনটি বিষয়ে ধ্বংস হওয়ার প্রার্থনা করেছেন। আর মহানবী (সা.) এতে বলেছেন আমিন। হে আল্লাহ আপনি কবুল করুন। এই বদদোয়া যে কবুল হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

                লেখক : গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর