শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

কুকি-চিন সন্ত্রাস

ওদের ধৃষ্টতা মানা যায় না

তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে বান্দরবানের পরিবেশ ছিল বরাবরই শান্তিপূর্ণ। ১৯৭৫ সালের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে বিদ্রোহ দানা বেঁধে ওঠে। তাদের সশস্ত্র শাখা পাহাড়ের শান্তি কেড়ে নিয়ে অশান্তির থাবা বিস্তার করে। শান্তি বাহিনী নামের পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে শান্তিশৃঙ্খলা। সেই দুঃসময়েও বান্দরবানের পরিবেশ ছিল অপেক্ষাকৃত শান্ত। এ জেলার মানুষ কিছু অস্ত্রধারীর অভিলাষের কাছে নিজেদের বিবেক বুদ্ধিকে বন্ধক রাখতে রাজি হয়নি। পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর পার্বত্য তিন জেলায় শান্তি ফিরে এলে তা বিঘিœত করতে চলছে নানামুখী অপচেষ্টা। অতি সম্প্রতি বান্দরবানের কিছু এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সৃষ্টি করেছে ক্ষুদ্র জাতিসত্তা কুকি সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য। কুকিরা বান্দরবানের আদি বাসিন্দা নয়। ১৪ শতকের দিকে ভারতের মিজোরাম এবং মিয়ানমারের চিন রাজ্য থেকে অভিবাসী হিসেবে বান্দরবান এলাকায় তাদের আগমন ঘটে। অভিযোগ রয়েছে কুকি সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে গঠিত তথাকথিত রাজনৈতিক সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এবং সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) গঠনের পেছনে আন্তর্জাতিক যোগাসাজশ রয়েছে। কুকিদের মধ্যে সক্রিয় পশ্চিমা খ্রিস্টান মিশনারিরা বিদ্রোহী তৎপরতায় ইন্ধন জোগাচ্ছে এমন অভিযোগও করা হয়। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য, সশস্ত্র এ সন্ত্রাসী সংগঠনটির সঙ্গে বাংলাদেশের একটি নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠীর সম্পর্ক রয়েছে। জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যরা বান্দরবানের গভীর জঙ্গলে কেএনএর ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ পেয়েছে এমন তথ্য এখন অনেকেরই জানা। কেএনএর সশস্ত্র কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান শুরু হওয়ার পর তাদের পক্ষ থেকে আলাপ-আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বলা হয়, আত্মসমর্পণ করে শান্তিপূর্ণ জীবনে ফিরে আসতে তারা আগ্রহী। এ বিষয়ে যখন দুই পক্ষের আলোচনা চলমান তখন তিন ব্যাংকে হামলা ও লুট এবং থানায় হামলা ধৃষ্টতার সব সীমা অতিক্রম করেছে। পার্বত্য এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা ও উন্নয়নের স্বার্থে সন্ত্রাস দমনে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর