শিক্ষার মান যাই হোক বাংলাদেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় নামের প্রতিষ্ঠান। দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা সর্বসাকল্যে ১৬৯টি। এগুলো তদারকির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) নামের দৃশ্যত একটি মর্যাদাবান প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। তবে এ প্রতিষ্ঠানকে ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার কিংবা ঠুঁটো জগন্নাথের সঙ্গে তুলনা করা যায়। কথিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলেও তাদের বিরুদ্ধে করার কিছু নেই ইউজিসির। চিঠি চালাচালি করে তারা দায়িত্ব সারেন। অনিয়মের বিরুদ্ধে শুধু ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করতে পারেন তারা। সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্তও করতে পারে না ইউজিসি। শুধু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলে সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে তদন্ত করে মন্ত্রণালয়কে প্রতিবেদন দিয়েই ক্ষ্যান্ত থাকেন। আর বেশির ভাগ প্রতিবেদনে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হলেও তা কার্যকর হয় না অজ্ঞাত কারণে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সক্ষমতা বাড়াতে উচ্চশিক্ষা কমিশনের দাবি করে আসছিলেন শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্টরা। এ-সংক্রান্ত আইন গঠনের জন্য সচিব কমিটি একটি খসড়া প্রস্তাবও তৈরি করে। এই প্রস্তাবের পরই থমকে গেছে উচ্চশিক্ষা কমিশন। কারণ শিক্ষাবিদরা বলছেন, সচিব কমিটির প্রস্তাবনা অনুযায়ী কমিশন গঠন করা হলে তা হতো আমলাদের পুনর্বাসন কেন্দ্র। তাই সে প্রক্রিয়া এগোয়নি। উচ্চশিক্ষা কমিশন প্রক্রিয়া থেমে যাওয়ার পর সরকার উদ্যোগ নিয়েছিল ইউজিসির সক্ষমতা বাড়ানোর। কিন্তু মহা ক্ষমতাধর আমলাতন্ত্রের কারণে সেটি সম্ভব হবে কি না সে প্রশ্নও কম নয়। দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন উচ্চশিক্ষিত বেকার সৃষ্টিতে অবদান রাখছে। দেশে বহু ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তির অভাব থাকলেও সে অভাব পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উদ্যোগ নেই। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় ক্ষমতাহীন ইউজিসি পোষা উচিত হবে কি না সরকারকে ভাবতে হবে।