রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

চেতনানাশক অ্যানেসথেসিয়া

জালিয়াতদের আইনের আওতায় আনুন

অস্ত্রোপচারের সময় চেতনা নাশের জন্য যে অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করা হয় তা নকল ও ভেজাল হওয়ায় কেড়ে নিচ্ছে একের পর এক প্রাণ। বিশেষত শিশুদের ওপর নকল ভেজাল অ্যানেসথেসিয়ার ব্যবহার বিপর্যয় ডেকে আনছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বিএসএমএমইউর মতো দেশের সবচেয়ে মর্যাদাবান চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানেও ভেজাল অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহারের পরিণতিতে তিন শিশু মারা গেছে। স্মর্তব্য, অস্ত্রোপচারের সময় অ্যানেসথেসিয়ার জন্য ব্যবহৃত ব্যয়সাশ্রয়ী ওষুধ হ্যালোথেনের ক্ষতিকর শারীরিক ও পরিবেশগত প্রভাবের কারণে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এটি নিষিদ্ধ করেছে। দেশে হ্যালোসিন ব্র্যান্ড নামেই এটি উৎপাদন করত এসিআই ফার্মাসিউটিক্যালস। গত বছর বাংলাদেশে এর উৎপাদন বন্ধ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। তবে কিছু হাসপাতালে হ্যালোথেন মজুত ছিল। মজুত কমে যাওয়ায় নকল হ্যালোথেন দেশের বাজারে ঢুকে যায়। চার মাসের ব্যবধানে বিএসএমএমইউর অ্যানেসথেসিয়া অ্যানালজেসিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগে যে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তাদের বয়স পাঁচ বছরের কম। তারা ছিল শ্রবণপ্রতিবন্ধী। শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশুদের শ্রবণ সহায়তায় কানে বিশেষ যন্ত্র ‘কক্লিয়ার’ স্থাপন করা হয়। এ তিন শিশুকেও কক্লিয়ার স্থাপনের আগে বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে অজ্ঞান করার জন্য হ্যালোথেন দেওয়া হয়েছিল। তাদের একজন মারা গেছে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর, এরপর একজন ১০ জানুয়ারি এবং শেষ জন ৩০ জানুয়ারি। পরে সায়েন্সল্যাবে পাঠানো হয় তিন শিশুর ওপর ব্যবহৃত হ্যালোথেনের নমুনা। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে ওষুধটি ছিল ভেজাল। তাতে হ্যালোথেনের বদলে ৫৮টি অন্য উপাদান পাওয়া যায়। এর ফলে নিশ্চিত হওয়া যায় বাজারে যে হ্যালোথেন রয়েছে তার একাংশ নকল ভেজাল। এমনিতেই হ্যালোথেনে ক্ষতিকর শারীরিক ও পরিবেশগত অপপ্রভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্র তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।  মার্কিন কোম্পানির অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশের যে প্রতিষ্ঠানটি তা উৎপাদন করত তারাও উৎপাদন ও বাজারজাত বন্ধ করেছে। এ প্রেক্ষাপটে সারা দেশে হ্যালোথেন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা উচিত। নকলকারীদের আইনের আওতায় আনতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সক্রিয় হতে হবে।

সর্বশেষ খবর