মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

কৃষিজমি রক্ষা করুন

দেশে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার বিঘা কৃষিজমি হারিয়ে যাচ্ছে। রাজধানীতে অনুষ্ঠিত বাণিজ্যিক ব্যবহারে ‘কৃষিজমি হ্রাস এবং ক্ষুদ্র চাষি ও গ্রামীণ দরিদ্র প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য উৎপাদন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় তার ব্যবহার’ শীর্ষক এক সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষণাটি করা হয়েছে ১১ জেলায়। দেশে আর্থসামাজিক ব্যাপারে নানা গবেষণা হয়ে থাকে। সব গবেষণাই যে প্রয়োজনীয় বা কাজের এমন দাবি করা যাবে না। তবে অস্বীকার করা যাবে না যে কৃষি উৎপাদনসহ কৃষি সম্পর্কিত যে কোনো অভ্যন্তরীণ সামষ্টিক উৎপাদনের শতকরা ৬০ ভাগই জোগান দিচ্ছে দেশের কৃষকরা। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১১ বছরে ১১টি জেলায় আবাসন খাতে ৬৭ লাখ ৯৭ হাজার ৬০০ বিঘা ও জলাশয় জমি চলে গেছে। এর মধ্যে ৬৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৮ বিঘা জমিই ছিল কৃষির। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ অর্থাৎ ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭১ জন তামাক চাষের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে। সাতক্ষীরা জেলা সম্পর্কে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, এ জেলার ৮০ শতাংশ কৃষিজমি এখন চিংড়ি চাষিদের দখলে। কৃষিজমি এভাবে অকৃষিকাজে চলে যাওয়ার ফলে দেশে দিন দিন খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে বলে মাঠ-গবেষণা বা ফিল্ড সার্ভেতে ধরা পড়েছে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কৃষিজমি হ্রাস পেলে খাদ্য উৎপাদন তো কমে যাবেই, উপরন্তু খেতমজুররা হয়ে পড়বে বেকার, কর্মহীন। তাই যেসব জেলায় কৃষিজমিতে তামাক চাষ হচ্ছে সেসব জেলায় চুক্তিবদ্ধভাবে অর্থাৎ ভাগচাষি ও খেতমজুররা তামাক চাষের মতো শরীরের জন্য ক্ষতিকর চাষে কাজ করতে বাধ্য হয়। কৃষিজমি যে দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে এটা গবেষণা ছাড়াও খালি চোখে দেশের মানুষ দেখে চলেছে। আবাসন, নির্মাণ, ইটভাটায় কত জমি যে ব্যবহৃত হচ্ছে তা-ই নয়, দেশের গণমাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে প্রায়ই লেখালেখি হয়ে থাকে, যাতে সরকার কৃষিজমি রক্ষার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে।        

♦ আফতাব চৌধুরী

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর