বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের শঙ্কা

সংযমী হতে হবে সব পক্ষকে

সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি দূতাবাস লক্ষ্য করে হামলার জবাবে ইসরায়েলে ইরানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে কি না সে আশঙ্কায় ভুগছে বিশ্ববাসী। জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী কোনো দেশের দূতাবাসকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা যায় না। ইসরায়েল সিরীয় দূতাবাসে হামলা চালিয়ে সে অপরাধই করেছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উচিত ছিল এ ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে অন্তত কড়া ধমক দেওয়া। কিন্তু তা না করে তারা প্রকারান্তরে ইরানকে পাল্টা হামলা চালাতে উৎসাহিত করেছে। নজিরবিহীন হামলা ইরান সম্পর্কে ইহুদিবাদী দেশটির বিশ্বাস নাড়িয়ে দিয়েছে। এ হামলা তেলআবিবের দীর্ঘকালের হিসাবনিকাশ ভুল প্রমাণ করেছে। তেলআবিব ভাবত আগ্রাসনের মাধ্যমে ইরানকে সর্বোত্তমভাবে নিবৃত্ত করা সম্ভব। বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে এবং ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় যুক্তি দেখাতেন, ইরানকে যত বেশি আঘাত করা যাবে ততই তার যুদ্ধের ক্ষমতা খর্ব হবে। রবিবার একযোগে ইরানের তিন শর বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত ছিল ইসরায়েলের ওপর ইরানের প্রথম সরাসরি আক্রমণ। এ হামলা ইসরায়েলি যুক্তি উল্টে দিয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে ইরানের নেতারা আর লেবাননের হিজবুল্লাহ বা ইয়েমেনের হুতিদের মাধ্যমে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রক্সি লড়াই করে সন্তুষ্ট থাকছে না। ইরান এখন সরাসরি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত। গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একজন প্রাক্তন গবেষণাপ্রধান বলতে বাধ্য হয়েছেন, তারা ভুল হিসাবনিকাশ করেছেন এতদিন। ইরানের প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষমতা নেই বলে যেমনটি ভাবা হতো তা ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। ইরান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে যে ভয় পায় না তাও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল গত রবিবারের হামলার পাল্টা পদক্ষেপ নিলে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা যে বেজে উঠবে তা অনেকটাই নিশ্চিত। যে বিপদ এড়াতে ইরান এবং ইসরায়েলসহ সব পক্ষকে সংযমী হতে হবে।

সর্বশেষ খবর