বাংলাদেশ মানব পাচারের অভয়ারণ্য বলে বিবেচিত অহরহ ঘটছে নারী পাচার। প্রতিবেশী ভারতের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেও বিস্তৃত পাচারকারীদের হাত। ভালো বেতনের চাকরির নামে প্রলুব্ধ করা হয় তরুণীদের। তারপর তাদের পাচার করে নিয়োজিত করা হয় দেহ ব্যবসায়। হতভাগ্য এই নারীদের একটা ক্ষুদ্র অংশের পক্ষেই সম্ভব হয় পাপ ব্যবসার ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাওয়া। তবে এক কিশোরীর কারণে সে শুধু নিজেকে নয় তার মা এবং চাচিকেও পাপ ব্যবসা থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। ভালো বেতনের চাকরির লোভ দেখিয়ে অবৈধভাবে ভারতে নিয়ে আসা ১৭ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশি কিশোরীর দুঃসাহস দেখে হতবাক মুম্বাই নগরীর পুলিশ। নারী পাচার চক্র মা ও চাচিসহ কিশোরীকে মুম্বাইতে নিয়ে আসে। তার মা এবং চাচিকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেখানকার পতিতালয়ে পাঠানো হয় দেহ ব্যবসার জন্য। এমনকি ওই নাবালিকা মেয়েকেও বিভিন্ন হোটেলে দেহ ব্যবসার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হতো। কিন্তু এ ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিল না ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোরী। ঘটনার প্রতিবাদ করায় ফোঁস করে ওঠে পাচার চক্রের সদস্য। সে হুমকি দেয় ওই মেয়ের দেহ ব্যবসার গোপন ছবি প্রকাশ করে দেওয়ার। এমনকি তার মা ও চাচিকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। আর এরপরই নিজেকে এবং মা ও চাচিকে পাচারকারী চক্রের হাত থেকে বাঁচাতে পাচার চক্রের এক সদস্যের চার বছরের পুত্র সন্তানকে অপহরণ করে ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোরী। এদিকে ছেলে অপহৃত হওয়ার পরই মুম্বাইয়ের মানপাডা থানায় অভিযোগ করে ওই ব্যক্তি। তদন্তে নামে পুলিশ, আটক করা হয় ওই বাংলাদেশি কিশোরীকে। জিজ্ঞাসাবাদে সে মা ও চাচিসহ তাকে ভারতে এনে দেহ ব্যবসায় নিয়োজিত করার ঘটনা ফাঁস করে দেয়। বলে মা চাচি ও নিজেকে বাঁচানোর জন্য সে নারী পাচারকারী চক্রের এক সদস্যের শিশুকে অপহরণ করতে বাধ্য হয়েছে। পুলিশ গ্রেফতার করেছে পাচারকারীকে। কিশোরীকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অভিনন্দন বাংলাদেশি সাহসী কিশোরীকে।