শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

সর্বনাশা দুর্নীতি

ধনী তৈরির কারখানা কাম্য নয়

বাংলাদেশ হতদরিদ্র অবস্থা থেকে পাঁচ দশকের ব্যবধানে মধ্যআয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও প্রথম সারিতে। মঙ্গা-দুর্ভিক্ষে এ ভূখণ্ড আক্রান্ত হয়েছে মুঘল আমলেও। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে দুর্ভিক্ষে প্রাণ হারিয়েছে এক-তৃতীয়াংশ মানুষ। তার পরও বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এই দেশে এখন খাদ্যাভাব নেই বললেই চলে। এটি হলো স্বাধীনতার সুফল। ঘাতপ্রতিঘাত মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এ সাফল্য অর্জন করেছে। এটি হলো মুদ্রার এক পিঠ। যেটি আলো ঝলমলে উজ্জ্বল। অন্য পিঠ অন্ধকারাচ্ছন্ন। দুর্নীতির দুর্বিপাকে প্রতিনিয়ত গুমরে কাঁদছে বাংলাদেশের মানুষ। দুর্নীতি সব সাফল্যকে গিলে খাচ্ছে। উন্নয়নের সুফল পরিপূর্ণভাবে ভোগ করতে পারছে না আমজনতা। ‘ফিফটি ইয়ার্স অব বাংলাদেশ ইকোনমি, পলিটিকস, সোসাইটি অ্যান্ড কালচার’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনরা বলেছেন, দেশে ধনী গরিবের ব্যবধান বাড়ছে। দুর্নীতির কারণেই তা ঘটছে। দুর্নীতি অতি ধনী সৃষ্টির কারখানা হিসেবে গড়ে উঠেছে। গরিব মানুষের উন্নতি হলেও তা হচ্ছে শামুকের গতিতে। পক্ষান্তরে ধনীর উন্নতি হচ্ছে রকেট গতিতে। স্বভাবতই ধনী ও গরিবের ব্যবধান বাড়ছে। দুর্নীতি রোধ করা গেলে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের আরও উন্নতি হতো। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সিপিডি আয়োজিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সুধীজনদের বক্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। সেনাপতি শাসকদের আমলে বাংলাদেশের বাজেট ঘোষণার আগে দাতা দেশগুলো বৈঠকে বসত।  কী পরিমাণ ভিক্ষা দেওয়া হবে। দেশের অর্থমন্ত্রী ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ছুটে যেতেন সেসব বৈঠকে। এখন বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের শীর্ষ ৪০টি দেশের মধ্যে। কিন্তু ঘুষ দুর্নীতির দৈত্য জাতির সব অর্জনকে গিলে খাচ্ছে নৃশংসভাবে। ধনীদের হাতে চলে যাচ্ছে দেশের সিংহভাগ সম্পদ। এ অকাম্য প্রবণতা থামাতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারকে পালন করতে হবে কার্যকর ভূমিকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর