গ্রীষ্মের দাবদাহে পুড়ছে দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিশাপে ষড়ঋতুর বাংলাদেশে কার্যত তিন ঋতুর দেখা মেলে। গ্রীষ্ম, বর্ষা আর শীত। এর মধ্যে গ্রীষ্মের থাবা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। দেশে রেকর্ড পরিমাণ দাবদাহে নদী-নালা, খাল-বিলে দেখা দিয়েছে পানি সংকট। চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। পার্বত্য তিন জেলা ও বৃহত্তর নোয়াখালী কুমিল্লায় পানির সংকট তীব্রতর হয়ে উঠছে। কাপ্তাই হ্রদে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির মাত্রা কমেছে। রাজশাহী ও আশপাশের জেলাগুলোয় পানি সংকট জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির মাত্রা কমেছে। ফলে এর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি উৎপাদনে। ওয়াসার পানি কম উৎপাদন হওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে সরবরাহে। তীব্র দাবদাহে পানি সংকটে পড়তে হচ্ছে ওয়াসার গ্রাহকদের। কাপ্তাই হ্রদে পানি পরিমাপের হিসাব রাখার রুলকার্ভ অনুযায়ী পানি থাকার কথা ৮৫ মিটার এমএসএল। কিন্তু এখন গরমে পানি কমে পাওয়া যাচ্ছে ৭৭ মিটার এমএসএল। বৃষ্টি না হওয়ায় হ্রদে পানি কমে গেছে। চট্টগ্রাম ওয়াসা সাধারণত দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করে। কিন্তু এখন দৈনিক ৭ থেকে ৮ কোটি লিটার পানি কম উৎপাদন করছে। চট্টগ্রাম ওয়াসা চারটি শোধনাগারের মাধ্যমে পানি উৎপাদন করে। পানির সরবরাহ কম থাকায় প্রতিটি শোধনাগারে উৎপাদন ব্যাঘাত ঘটছে। দেশের উপকূলভাগে মিঠাপানির উৎস একেবারে সীমিত। গ্রীষ্মের দাবদাহে সংকট অসহনীয় হয়ে উঠছে। পানি সংকটকে গ্রীষ্মকালীন সমস্যা ভাবার অবকাশ নেই। বাংলাদেশকে বলা হয় মিঠাপানির দেশ। এ দেশের নদ-নদী, খাল, হ্রদ মিঠাপানির প্রধান উৎস। কিন্তু নদ-নদী, খাল-বিল শুকিয়ে যাচ্ছে বৃষ্টির পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায়। উজানে নদ-নদীর পানি প্রত্যাহারও সংকট বাড়াচ্ছে। এ কঠিন সমস্যার মোকাবিলায় নদ-নদী-খাল খনন ও পানি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে হবে।