রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিজ্ঞানচর্চার জনমুখী-অভিমুখ

বিজ্ঞান, অঙ্ক, জ্যোতির্বিজ্ঞানচর্চায় বাংলাদেশের অবদানের কথা সারা পৃথিবীর মানুষ স্বীকার করে। কিন্তু এই গৌরবগাথায় আমাদের দেশের অবৈজ্ঞানিক মানসিকতা- এইডস রোগীকে না-ছোঁয়ার জন্য সাবধানবাণী, রোগ প্রতিষেধক টিকা না-নেওয়া, সাপে কাটা রোগীকে ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া, পুত্রসন্তান না-হওয়া পর্যন্ত কিশোরী বধূটির বার বার মা হওয়ার মতো অবৈজ্ঞানিক কাজকর্ম বন্ধ হয়নি। সত্যি বলতে কি, বিজ্ঞান হলো একটা দৃষ্টিভঙ্গি, ব্যবহারিক সমস্যা সমাধানের একটা প্রয়াস। রোজকার জীবনে নামিয়ে না-আনলে তার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয় না। এই দুটি ক্ষেত্রে ক্রমেই পিছু হটছি আমরা। এর সঙ্গে অবশ্য দেশে-বিদেশে বিজ্ঞানে আমাদের দেশের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষায় সাফল্য কিংবা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে তাক লাগানো বেতনের চাকরির কোনো সম্পর্ক নেই। এসব কিছু বাদ দিয়ে ব্যবহারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিজ্ঞানচর্চার দিকে তাকালে বিজ্ঞানচর্চায় বাংলাদেশের ছবিটি কেমন? কয়েকটি উজ্জ্বল ব্যতিক্রম বাদ দিলে আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতিমান বেশ কজন নজরকাড়া বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। আরও একটা আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, বিজ্ঞানসম্মত চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনায় ব্যবহারিক প্রয়োগ সেই প্রাচীনকালেই আমাদের সভ্যতাকে কতটা সমৃদ্ধ করেছিল তা নিয়ে এ নব্য বিজ্ঞানবিলাসীরা একেবারে নীরব। প্রাচীন বদল এ অঞ্চলের নগর পরিকল্পনা, বাস্তুশাস্ত্র ও স্থাপত্য ভাবনা, প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার এবং যেসব নিয়ে এসব দেশি বা লৌকিক জ্ঞান এখনো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে টিকে আছে, স্ব-স্ব ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক ও বিশেষজ্ঞরা যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাগুলো কাজে লাগানোর কথা বারবার বলছেন তা নিয়ে কিন্তু এরা খুব একটা কিছু বলেন না।

               আফতাব চৌধুরী

সর্বশেষ খবর