সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

আউলিয়া কেরামদের ইসলাম প্রচারে অনন্য ভূমিকা

আবদুর রশিদ

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে আত্মনিবেদিত পীর ও আউলিয়া  কেরাম ইসলাম প্রচারকে তাদের মূল লক্ষ্যরূপে নির্ধারণ করেন। তারা ওয়াজ-নসিহত, তালিম-তালকিন এবং জাহেরি-বাতেনি পন্থায় ইসলাম প্রচার করেন। মানবসেবার মাধ্যমে আউলিয়ায়ে  কেরাম মানুষের মনে ঠাঁই করে নেন। তারা ইসলামের অমূল্য বাণী সংবলিত বই-পুস্তক রচনা করেন। উপযুক্ত খলিফা ও প্রতিনিধি তৈরি করে তাদের মাধ্যমে দূর-দূরান্তে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দেন। আউলিয়ায়ে কেরাম প্রিয়নবী (সা.)-এর যোগ্য ওয়ারিশ ও উত্তরাধিকার। প্রিয়নবী (সা.)-এর ইলম ও জ্ঞানের তারা ধারক-বাহক। ফলে তাঁর আনীত ইসলামের প্রচারে তাদের নিরলস চেষ্টা ও সাধনা সর্বজনস্বীকৃত। আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর জীবন ইতিহাস পর্যালোচনায় স্পষ্ট হয় যে, ইসলাম প্রচারে তাঁর সাধনা কত বেশি বিস্তৃত ছিল। তিনি নিজে জাহেরি ও বাতেনি ইলমের সমুদ্র ছিলেন। তিনি বাগদাদের নিজামিয়া মাদরাসায় অধ্যাপনা করেছেন, প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন, মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি খানকাকেন্দ্রিক তালিম-তালবিয়াতের মাধ্যমে ইসলামের প্রচার-প্রসার ঘটিয়েছেন। আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) ইসলামের সৌন্দর্য, বৈশিষ্ট্য ও তত্ত্ব প্রচারে বহু বই-পুস্তক রচনা করেছেন। হজরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতি (রহ.) শুধু ইমান-ইসলামের প্রচারের স্বার্থেই তাঁর জন্মস্থান ত্যাগ করে আজমিরে এসে বসবাস করেছেন। রাজা পৃথ্বীরাজের প্রবল প্রতাপকে ধূলিসাৎ করে তিনি লাখ লাখ অমুসলিমকে ইসলামের ছায়াতলে নিয়ে আসেন। তাঁর দরবার ও খানকাকে কেন্দ্র করে তালিম ও তালকিনকে অনুসরণ করে এখনো ইসলামের প্রচার ঘটছে। সিলেট হযরত শাহজালাল ইয়েমেনি, চট্টগ্রামে বায়েজিদ বোস্তামী, রাজশাহীতে শাহ মখদুমসহ আউলিয়া  কেরামের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। চলমান সময়ে যখন নানারকম বাড়াবাড়ি, সীমা লঙ্ঘন ও উগ্রপন্থা ইসলাম ও মুসলমানদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে কালিমা লেপন করছে তখন পীর, মুর্শিদ ও ওলি-আউলিয়া ইসলামের শান্তির বাণী, মানবতার বাণী, অহিংস-অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা প্রচার করে যাচ্ছেন অবিরাম অবিরত। তাদের এ আহ্বান, প্রচার-সাধনা চলমান থাকুক অনন্তকাল। আমিন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

সর্বশেষ খবর