মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

প্লাস্টিক বর্জ্য

নদনদীর সর্বনাশ থামাতে হবে

দেশের নদনদী, খাল-বিলগুলো প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। অপচনশীল এ বর্জ্যে ভরাট হচ্ছে প্রাকৃতিক জলাশয়। স্যুয়ারেজ লাইনও অচল হয়ে পড়ছে প্লাস্টিক বর্জ্যরে ভারে। নদনদী, খাল-বিল তো দূরের কথা, সাগর-মহাসাগরেও প্লাস্টিক পলিথিন ফেলা নিরুৎসাহিত করা হয় বহু দেশে। অথচ বাংলাদেশে নদনদী, খাল-বিল ভরাট এবং অপদখলে ব্যবহৃত হয় প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য। নদীর পাড়ের মাটি খুঁড়লে মেলে ১৫-২০ বছরের পুরনো পলিথিন। এ বর্জ্যে মাটির উর্বরতা কমছে। দূষিত হচ্ছে পানি। এক পর্যায়ে এই প্লাস্টিক গুঁড়া হয়ে খাদ্যচক্রের মাধ্যমে ঢুকছে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর দেহে। সৃষ্টি করছে ক্যান্সারসহ নানা প্রাণঘাতী রোগ। সামগ্রিকভাবে এর আর্থিক ক্ষতি গিয়ে দাঁড়াচ্ছে কয়েক লাখ কোটি টাকায়। আইন করে পলিথিন নিষিদ্ধ করার পরও সব সম্ভবের এই দেশে বেড়ে চলেছে এর উৎপাদন ও ব্যবহার। বর্তমানে দেশে বছরে উৎপন্ন হচ্ছে ৮ লাখ ২১ হাজার টনের বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য। দেশে ২০০২ সালে পলিথিনের শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হলেও সেখানেও ছিল শুভংকরের ফাঁকি। আইনের ফাঁকের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধের বদলে বাড়ছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী পলিথিনে তৈরি সব ধরনের শপিং ব্যাগ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ, বিক্রি ও মজুত নিষিদ্ধ হলেও তা বন্ধ হয়নি এগুলো দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের তাদের গাফিলতির কারণে। বাংলাদেশের রাজধানীতে প্রশাসনের নাকের ডগায় চালু রয়েছে একটি-দুটি নয়, প্রায় হাজারখানেক পলিথিন তৈরির কারখানা। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশে বছরে ৮ লাখ ২১ হাজার ২৫০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর ৪০ শতাংশ রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহার হয়। বাদবাকি প্লাস্টিক পণ্য যেখানে-সেখানে পড়ে থাকে অথবা নদনদী, খাল-বিল, জলাশয়ে ফেলা হয়। পরিবেশ সুরক্ষায় পলিথিন ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে ভাবতে হবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের চোখ-কান খোলা রাখাও জরুরি।

সর্বশেষ খবর