শিরোনাম
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

লিঙ্গবৈষম্যই কি নারী নির্যাতনের কারণ

আফতাব চৌধুরী

২০৩০ সালের মধ্যে জেন্ডার সমতা অর্জন করাটা জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর এক উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য। এই বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিটি সদস্যরাষ্ট্র নিজেদের প্রস্তুত করছে। জেন্ডার সমতার মধ্যে অনেক কিছুই অন্তর্ভুক্ত; যেমন সমঅধিকার, সমান মজুরি, সমান সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি। এসব অর্জনের জন্য মহিলাদের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করতে হবে এবং সহিংসতার ভীতি ও বৈষম্যমুক্ত একটি পৃথিবীতে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ তাদের দিতে হবে। নারী-পুরুষ বৈষম্যের কারণেই নারীর প্রতি সহিংসতা ঘটে থাকে। এর বিভিন্ন রূপ রয়েছে যেমন- ঘনিষ্ঠ সঙ্গীদের মাধ্যমে নির্যাতন বা সহিংসতার শিকার হওয়া, পারিবারিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন ও হত্যাকান্ডের শিকার হওয়া। তবে এ নির্যাতন করাটা শুধু কাছের বা ঘনিষ্ঠদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বাইরের লোকজনের দ্বারাও নারীরা নানা সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। কেবল নারী হওয়ার কারণেই তাদের পুরুষরা এ ধরনের নির্যাতন করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিভিন্ন দেশের ওপর বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা নারী নির্যাতনবিষয়ক গবেষণা করে। তাতে দেখা যায়, নারীরা তাদের বিবাহিত জীবনে একবার না একবার তাদের স্বামীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। স্বামী বা ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর মাধ্যমে যৌন বা শারীরিক কিংবা উভয় ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন এমন নারীর হার ১৫ থেকে ৭১ শতাংশ। এসব সহিংসতা সংঘটনের হার ও মাত্রা দেশ ভেদে ভিন্ন হলেও ব্যক্তি ও পরিবারের ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব সর্বজীনন এবং স্বাস্থ্য সমস্যার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। নারীর প্রতি সহিংসতা ব্যক্তি, পরিবার, সম্প্রদায় ও সরকারকে দুর্বল করে দেয় এবং একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ব্যাহত করে।

সমীক্ষায় দেখা যায়, ৮৭ শতাংশ বিবাহিত নারী তাদের স্বামী কর্তৃক কোনো না-কোনো সহিংসতা বা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ৭৭ শতাংশ নারী গত ১২ মাসে কোনো না-কোনো নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এসব নির্যাতিত নারীর মাত্র ২.৪ শতাংশ তাদের বর্তমান স্বামীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেন এবং ৮.৯ শতাংশ নির্যাতিত নারী তাদের প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেন। জানা গেছে, ১৪ শতাংশ মাতৃমৃত্যুর জন্য নারীর প্রতি সহিংসতা দায়ী। ইউএন উইমেনের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনুমানিক ৭৬ শতাংশ ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হন। ক্যাম্পাসের ভিতরে ও বাইরে ওই প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্ট পুরুষেরাই ছাত্রীদের এসব হয়রানি করে থাকেন।

সর্বশেষ খবর