দুর্নীতির দুর্ভেদ্য ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের গোপন প্রতিবেদনে ওই বিমানবন্দরের সর্বস্তরের দুর্নীতির যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা আরব্য উপন্যাসের বাগদাদের চোরকেও হার মানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের ভৌত নিরাপত্তায় নিয়োজিত অ্যাভসেক শাখার নিজস্ব নিরাপত্তা সদস্যরা বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীদের কাছ থেকে বকশিশের নামে চাঁদাবাজি করে। তাদের বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালান, ইয়াবা পাচার এবং বৈদেশিক মুদ্রা পাচারে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে। বিমানবন্দরের এস্টেট শাখার বিরুদ্ধেও রয়েছে গুরুতর অভিযোগ। এ শাখায় কর্মকর্তারা বিমানবন্দরের টার্মিনালের স্পেস ইজারা কিংবা নবায়নে উৎকোচ গ্রহণ, ইজারাদারদের কাছ থেকে মাসোহারা আদায়, টেন্ডার যোগসাজশের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা গ্রহণসহ নানান অপরাধে যুক্ত। বেবিচক সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় উন্নয়ন ও মেরামত কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী সরবরাহ, অদক্ষ প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে সহায়তা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে উৎকোচ গ্রহণ করে নিম্নমানের কাজের সহায়তার বিষয়ে বলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। বিমানবন্দরে দায়িত্বরত ২০০ আনসার সদস্য যাত্রীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টিপস আদায়, ড্রাইভওয়েতে প্রবেশের জন্য যাত্রীদের স্বজনদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে আদায়সহ নানান অপরাধে যুক্ত। এবিবিএন সদস্যদের বিরুদ্ধে রয়েছে বিমানবন্দর ও সংলগ্ন এলাকায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজির অভিযোগ। প্রবাসীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মূল্যমান মালামাল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বিমানবন্দর ফাঁড়ি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা সোনা চোরাকারবারিদের সহায়তাসহ তাদের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে। শাহ আমানত বিমানবন্দর সোনা চোরাচালানের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত দীর্ঘদিন ধরে। বিমান বাংলাদেশ ও ফ্লাই দুবাই এয়ারলাইনসের কর্মীদের সহযোগিতায় অবাধে চলছে চোরাচালান। দুর্নীতিবাজদের সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ কঠোর অবস্থান নেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।