শিরোনাম
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

গরমের আমল

মো. আবু তালহা তারীফ

গরমের আমল

তীব্র গরমে দিশাহারা সবাই। আবহাওয়া অধিদফতর দেশে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে। গরম মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। যা বুখারি শরিফের বর্ণনায় এসেছে, রসুল (সা.) বলেন, ‘জাহান্নাম তার প্রতিপালকের কাছে এ বলে নালিশ করেছিল, হে আমার প্রতিপালক দহনের প্রচন্ডতায় আমার এক অংশ আরেক অংশকে গ্রাস করে ফেলছে। ফলে আল্লাহ তাকে দুটি শ্বাস ফেলার অনুমতি দেন। একটি শীতকালে অপরটি গ্রীষ্মকালে। আর তাই তোমরা গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড উত্তাপ এবং শীতকালে তীব্র ঠান্ডা অনুভব করো’। তীব্র গরমে মুমিনদের থেমে থাকা উচিত নয়। অসহায় পথিকসহ যখন ইচ্ছা তখনই সহযোগিতা করা যায়। আমরা তীব্র এই গরমে অসহায়কে ফ্যান বা ছাতা দিয়ে সহযোগিতা করতে পারি। মহল্লা বা রাস্তার পাশে পথিকদের জন্য ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা করে পিপাসার্ত ব্যক্তিকে পানি পান করিয়ে অধিক সওয়াব লাভ করার সুবর্ণ সুযোগ এই তীব্র এই গরমে। তীব্র গরম যেহেতু জাহান্নামের নিঃশ্বাস এজন্য দান সদকা করা অপরিহার্য। কেননা দান সদকা জাহান্নামের আগুনকে নিভিয়ে দিতে সহায়তা করে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সদকা বা দান জাহান্নামের আগুন নির্বাপণ করে। আর পানি পান করানো উত্তম সদকা’ (আবু দাউদ)।

তীব্র গরম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পরিবেশের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া খুবই জরুরি। প্রচন্ড রোদে গাছের নিচে একটু বিশ্রামের জন্যও যে ছায়া পাওয়া যেত সেই গাছ কেটে নির্বিচারে ধ্বংস কারা ঠিক নয়। একটি দেশের মোট আয়তনের ২৫ ভাগ বনভূমির প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশের মোট বনভূমির আয়তন প্রায় ১৫ ভাগ। যা জনসংখ্যার তুলনায় খুবই কম। অক্সিজেন, বাতাস ও ছায়া পেতে অবশ্যই গাছ রোপণ করে তীব্র গরম থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো বৃক্ষ রোপণ করল, আল্লাহ রব্বুল আলামিন এর বিনিময়ে তাকে এই বৃক্ষের ফলের সমপরিমাণ প্রতিফল দান করবেন’ (মুসনাদে আহমদ)।

ভয়াবহ গরমে আল্লাহর অনুগ্রহ পেতে  বেশি বেশি করে জিকির ও দরুদ শরিফ পাঠসহ অতিরিক্ত নফল নামাজ আদায় করুন। মোনাজাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে দোয়া করুন। দেশ ও দশের জন্য বৃষ্টি কামনা করুন। হজরত জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচন্ড গরম পড়ায় এক দিন রসুলুল্লাহর কাছে কিছু লোক আগমন করে গরমের তীব্রতায় কাঁদছিল। তখন তিনি তাদের জন্য এভাবে দোয়া করলেন, দোয়াটি হলো, ‘আল্লাহুম্মাস কিনা গাইসান মুগিসান মুরিয়ান নাফিয়ান গাইরা দাররিন আজিলান গাইরা আজিলিন’। অর্থ হচ্ছে, হে আল্লাহ, আমাদের বিলম্বে নয় বরং তাড়াতাড়ি ক্ষতিমুক্ত-কল্যাণময়, তৃপ্তিদায়ক, সজীবতা দানকারী, মুষলধারায় বৃষ্টিবর্ষণ করুন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তাদের ওপর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যায় এবং বৃষ্টি হয় (আবু দাউদ)।

♦ লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর