শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

শিক্ষা খাতে দুর্নীতি

সরকারকে কঠোর হতে হবে

শিক্ষা খাত কলঙ্কিত হচ্ছে দুর্নীতি নামের ভয়াল দ্বৈত্যের থাবায়। শিক্ষা মানুষের হৃদয় থেকে অন্ধকার দূর করে। জ্ঞান প্রদীপের আলোকে মানুষ আলোকিত হয়। শিক্ষার সঙ্গে দুর্নীতির দূরবর্তী সম্পর্ক থাকার কথা নয়। অথচ সব সম্ভবের এই দেশের শিক্ষা খাত আর ঘুষ দুর্নীতি সমার্থকে পরিণত হয়েছে। পাহাড়সম অনিয়ম আর দুর্নীতি শিক্ষা খাতের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারীদের সার্টিফিকেট বাণিজ্য, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসিদের অনিয়ম-দুর্নীতিসহ শিক্ষার এমন কোনো দফতর নেই যেখানে দুর্নীতি নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলর-ট্রেজারার না থাকাসহ অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে শিক্ষার মান তলানিতে ঠেকেছে। সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তদারকিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ভূমিকা রাখার কথা থাকলেও তারাও এ কাজ যথাযথভাবে পারছেন না, তাদের ঠুঁটো জগন্নাথ বানিয়ে রাখার কারণে। ফলে অনেকটা ফ্রি-স্টাইলে অনিয়ম চলছে উচ্চশিক্ষার বিদ্যাপীঠগুলোতে। সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষকদের কেউ কেউ জাল সনদে চাকরি করছেন। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় আছে এমন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্তত ৩৩টিতে কোনো ভাইস চ্যান্সেলর নেই। অথচ এ পদটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহীর। আর যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আর্থিক বিষয় দেখভাল করবেন সেই ট্রেজারার নেই অন্তত ৩১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। শীর্ষ কর্মকর্তা না থাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনিয়ম নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম চলছে লাগামহীনভাবে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসিসহ কর্তাব্যক্তিরা খেয়াল-খুশিমতো চলছেন। বর্তমানে বেশ কয়েকজন ভিসির বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনা করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। একজন ভাইস চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে নিয়োগের মাধ্যমে ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ ১০ দফা অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা একটি আলোকিত দেশ ও জাতি গঠনের আশা পোষণ করতেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে যে দুর্নীতি ও অনিয়ম চলছে তা দূর করতে সরকারকে কঠোর হতে হবে। দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বনের বিকল্প নেই।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর