শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

বেসামাল জলবায়ু

কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব

এক সময়কার কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে কৃষি খাতে কর্মসংস্থান কমছে। মাত্র তিন দশক আগেও যেখানে কৃষি ছিল কর্মসংস্থানের প্রধান ভরসা, সেখানে ২০২৩ সালে কৃষি খাতে কর্মসংস্থান কমেছে ১০ শতাংশের মতো। অবশ্য এ সময়ে শিল্প ও সেবা খাতে ১৭ শতাংশ কর্মসংস্থান বেড়েছে। শ্রমবাজারেও ব্যাপকভাবে কমেছে নারীর অংশগ্রহণ। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে যেসব কর্মী কৃষি ছাড়ছেন, ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানিগুলো তাদের অন্যান্য সেবায় নিয়োগ দিতে পারছে না। নারীদের কর্মক্ষেত্রে কম সুযোগ আরেকটি চ্যালেঞ্জ। দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেরই চাকরি করা নারীর সংখ্যা বিশ্বে সর্বনিম্ন বা ৪০ শতাংশেরও নিচে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কম হওয়ায় কৃষির বাইরে অন্য খাতে কর্মসংস্থান বাড়ছে না। পাশাপাশি গুণগত মানের বিনিয়োগ হচ্ছে না। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক কাজ করে তৈরি পোশাক খাতে। ৪০ লাখের বেশি শ্রমিকের ৬৫ শতাংশই নারী। অথচ পাঁচ বছর আগেও পোশাক খাতের শ্রমিকদের ৮০ শতাংশই ছিল নারী। শুধু তৈরি পোশাকশিল্পেই নয়, সার্বিকভাবে কর্মসংস্থানে নারীর অংশগ্রহণ কমেছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ বার্নাড হেভেনের অভিমত, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল হতে পারে। এতে ভবিষ্যতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি কঠিন হবে। এসব কিছু বিবেচনা করে বাংলাদেশের কর্মসংস্থান তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেও কর্মসংস্থান কমেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে প্রচন্ড দাবদাহের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করা হয়। যার আওতায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যাই বেশি। জলবায়ু পরিবর্তনের অশুভ প্রভাবে কৃষি খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ যে কমেছে তা একটি বাস্তবতা। বিশ্বব্যাংকের সুযোগ কমে যাওয়ায় যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তা উদ্বেগজনক। নারীর ক্ষমতায়নের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছিল তৈরি পোশাক খাত। সে খাতেও নারীর অংশগ্রহণ হ্রাস পাওয়ায় চিন্তার বিষয়। এসব ক্ষেত্রে সমস্যা ও সংকট উত্তরণে সরকারকে সক্রিয় হতে হবে।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর