শনিবার, ৪ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

৩০০ সেরায় নেই

চাই সুষ্ঠু পরিবেশ এবং সাধনা ও গবেষণার সুযোগ

অত্যন্ত হতাশা ও দুর্ভাগ্যজনক যে, এশিয়ার সেরা ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের একটিরও নাম নেই। দেশে বর্তমানে ৫৫টি সরকারি এবং ১১৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক টাইমস হায়ার এডুকেশনের সম্প্রতি প্রকাশিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি র‌্যাংকিং ২০২৪-এ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে ৩০১ থেকে ৩৫০ এর মধ্যে। ৩৫১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। আর একদা প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান হয়েছে ৪০১ থেকে ৫০০-এর মধ্যে। দুঃখজনক যে, গতবারের চেয়েও এবার র‌্যাংকিংয়ে অনেক পিছিয়ে গেছে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। গতবার এশিয়ার সেরা ২০০-এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ১৮৬তম এবং বেসরকারি নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ১৯২তম স্থানে। এবার নর্থ-সাউথ ৩৫১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে নেমে গেছে। এখন আমাদের খুঁজতে হবে এই পিছিয়ে পড়ার কারণ কী? কারণ হচ্ছে- যেসব আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যায়ন করা হয়, তার মধ্যে রয়েছে- শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত (১:৩০ আদর্র্শ ধরা হয়), পাঠদান প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি, ছাত্র-শিক্ষকদের গবেষণা এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে সেসব প্রকাশের মাধ্যমে সুখ্যাতি অর্জন ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে আমাদের বিস্তর ঘাটতি রয়েছে। দেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা যেন শুধুমাত্র পদোন্নতির জন্য গবেষণা করেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পদোন্নতির পর আর তাদের গবেষণা অব্যাহত থাকে না। আবার গবেষণার ক্ষেত্রে অনেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুরুতর অসততার অভিযোগও ওঠে। এগুলো বিশ্ব পরিমলণ্ডলে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। জাতির শীর্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে। এসব বিচ্যুতি থেকে বেরিয়ে আসার কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। যেসব সংগত-অসংগত কারণে পরিবেশ বিশৃঙ্খল হয়, সেসব থেকে শতহস্ত দূরে থাকতে হবে। জ্ঞানার্জন এবং জ্ঞানদানই হতে হবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সাধনা। শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ কলুষিত হয়, অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়- এমন সব কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে নিষিদ্ধ হতে হবে। তার তদারকিও হতে হবে কঠোরতর দৃঢ়তায়। শিক্ষা ও গবেষণায় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা অর্থাৎ বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিরাও এগিয়ে আসতে পারেন। আমরা শিক্ষায় আমাদের উৎকর্ষের ঐতিহ্য ফিরে পেতে চাই।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর