শনিবার, ৪ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

তেল গ্যাস অনুসন্ধান

স্থল ও সাগরপ্রান্ত দুই দিকেই জোর দিন

বাংলাদেশ জোরকদমে এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের পথে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ ছিল অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে পিছিয়েপড়া দেশ। পাঁচ দশকের ব্যবধানে এখন বিশ্বের দুই শতাধিক দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৩৫তম। আগামী চার বছরের মধ্যে পদ্মা, মেঘনা-যমুনা-বুড়িগঙ্গা পাড়ের এই দেশ হবে পৃথিবীর প্রথম ২০টি বড় অর্থনীতির একটি। অস্ট্রেলিয়া ও ইরানের মতো সমৃদ্ধ দেশকেও বাংলাদেশ ছাড়িয়ে যাবে- এমন ভবিষ্যদ্বাণী আইএমএফের। তবে আশার বাণী শুনে বসে থাকলে চলবে না। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য জ্বালানিশক্তির সহজপ্রাপ্যতা। দুনিয়ার যেসব দেশ তেল-গ্যাস কয়লাসহ জ্বালানির ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীল বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। এ সংকট কিছুটা কাটাতে স্থলভাগে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) তোড়জোড় শুরু করেছে। ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটাতে রাষ্ট্রীয় সংস্থা নিয়েছে এই উদ্যোগ। এর অংশ হিসেবে আগামী চার বছরের মধ্যে ১০০ কূপ খননের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কূপগুলো খননে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৫০ কোটি টাকা। এতে জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে ৪৮ দশমিক ৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস। স্থলভাগে দেশে নতুন সম্ভাব্য এলাকায় গ্যাসের মজুত চিহ্নিত করতে আগামী কয়েক বছরে ১০ হাজার ২২৫ লাইন কিলোমিটার (কি.মি.) টুডি এবং ৭ হাজার ৮৫৪ বর্গ কি.মি. থ্রিডি সাইসমিক সার্ভে করা হবে। এতে খরচ হতে পারে ৩ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। বাংলাদেশের স্থলভাগে ২২টি গ্যাস ব্লক রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি উন্মুক্ত। এই ব্লকগুলোতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করা হবে। দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটাতে পেট্রোবাংলা ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে ২৩টি কূপ বাপেক্সের রিগ দিয়ে এবং ২৫টি কূপ আউটসোর্সিয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, দেশের স্থলভাগে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে বাপেক্সকে করতে হবে আরও সক্রিয়। পাশাপাশি সাগরপ্রান্তে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। জ্বালানি ক্ষেত্রে পরনির্ভরতা কমানোর এটিই প্রকৃষ্ট পথ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর