সোমবার, ৬ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

সুন্দরবনে আগুন

দুর্ঘটনা না নাশকতা খুঁজে বের করুন

সুন্দরবন আমাদের ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ। বঙ্গোপসাগর উপকূলে বিস্তৃত এ ম্যানগ্রোভ বনভূমি প্রকৃতির এক বিস্ময়। হাজার বছর ধরে ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস থেকে এ জনপদকে রক্ষা করে চলেছে সুন্দরবন। অথচ নানা নাশকতায় দিনকে দিন এর আয়তন ছোট হয়ে আসছে। বিপন্ন হচ্ছে প্রাণী ও বনজ বৈচিত্র্য। সেই সুন্দরবনে আবার লাগল আগুন। বনের এমন অংশে আগুন লেগেছে যেখানে বিভিন্ন পশু-প্রাণীর বিচরণ বেশি। তারা এখন চরম বিপন্ন। বৈধ বা অবৈধ মৌয়াল, জেলে, কাঠুরে, চোরা শিকারি বা পর্যটকদের অসতর্কতায় আগুন লাগতে পারে। হতে পারে নাশকতার আগুনও। ঘটনা যাই হোক- তা দেখার এবং নিয়ন্ত্রণ ও নির্বাপণের দায়িত্ব কাদের? তাদের সততা, নিষ্ঠা ও সক্রিয়তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিতেই পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে সক্ষমতা নিয়েও। বন রক্ষায় নিয়োজিত বিভাগ ও বাহিনীর সব ধরনের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সংকটকালে দুর্গম গহিন বনে ঢুকে দ্রুত প্রয়োজনীয় কাজ করার উপযোগী যান ও প্রযুক্তি তাদের থাকতে হবে। ওসমান গনি নামে বন বিভাগের সাবেক এক শীর্ষ কর্মকর্তার নাম পাঠক হয়তো ভুলে যাননি। তার বালিশে-তোশকে ভরা ছিল টাকা আর টাকা। আজকের বন কর্তাদেরও কেউ কেউ যদি চূড়ান্ত অসাধু সেই গনি মিয়ার অনুসারী হন- নির্বিচারে অনুমতি দেন জেলে, মৌয়াল, কাঠুরে বা চোরা শিকারিদের। পরিণতি বারবার এরকমই হবে, সুন্দরবন পুড়তে থাকবে। বিপন্ন হবে আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য। এ পরিপ্রেক্ষিতে বন বিভাগের জনবল এবং তদারকি বাড়াতে হবে। তাদের প্রয়োজনীয় যানবাহন এবং আধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি দিতে হবে- যেন দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেন। পাশাপাশি বনে নাশকতা, বন নিধন, অবৈধ শিকার, বনকর্মীদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধেও শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। এসবের বিচার দ্রুত এবং এর আইন কঠোরতর করতে হবে। না হলে বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার আর মায়াবী চিত্রাহরিণের ঠিকানা ছোট হতে হতে হয়তো কখনো হারিয়ে যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এর ওপর নির্ভরশীল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অসংখ্য মানুষ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর