মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিমান বিসংবাদ

দুর্নাম রোধে সক্রিয় হোন

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস আর লোকসান একসময় সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছিল। খাতাপত্রে লোকসান কমলেও ঋণের বোঝা বহন করা এ সংস্থার নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিমানের রথী-মহারথীদের একাংশের কর্মকা- আরব্য উপন্যাসের বাগদাদের চোরকেও যে হার মানায় তা একটি ওপেন সিক্রেট। বিশ্ব পরিসরে যাত্রী পরিবহনে বিমানের অবস্থান আফ্রিকার কম জনসংখ্যার অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশ ইথিওপিয়ার বিমান সংস্থারও অনেক অনেক নিচে। অথচ বাংলাদেশের অন্তত ১ কোটি মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত। তারা দেশে আসা এবং কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিমানে চলাচল করাই পছন্দ করেন। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে হজ ও ওমরাহ পালন করেন কয়েক লাখ মানুষ। তারপরও বিমান লোকসান গুনেছে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার সুবাদে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও পদ্মা অয়েল কোম্পানির কাছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের রয়েছে বিপুল পরিমাণ দেনা। গত বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেবিচকে দেনা ছিল ৫ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। আয়-ব্যয় বিবরণীতে লাভ দেখালেও গত নভেম্বর পর্যন্ত বিমানের কাছে পদ্মা অয়েলের পাওনা ছিল ১ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা। বিমান ২০২২-২৩ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে ৩১ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে। আগের অর্থবছরে এ সংখ্যা ছিল ২২ লাখ। এক বছরের ব্যবধানে ৯ লাখ বেশি যাত্রী পরিবহন করলেও এর প্রতিফলন নেই বিমানের নিট মুনাফায়। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৩৭ কোটি টাকা মুনাফা করলেও গত অর্থবছরে করেছে কেবল ২৮ কোটি টাকা। রুটভিত্তিক লাভ-লোকসানের দিক থেকে বিমান সবচেয়ে বেশি লোকসান করে ঢাকা-ম্যানচেস্টার রুটে। শুরু থেকে এ রুটে শুধু লোকসান গুনছে। ঢাকা ও কানাডার টরন্টো রুটেও অভিন্ন অবস্থা। মধ্যপ্রাচ্য বিমানের রেভিনিউ জেনারেটিং রুট হিসেবে বিবেচিত হলেও কুয়েত-আবুধাবি দুবাইয়ের মতো জনপ্রিয় রুটেও প্রতিদিন ১ কোটির বেশি টাকা গচ্চা যাচ্ছে। দেশের মর্যাদার স্বার্থেই লোকসানি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিমানের যে দুর্নাম গড়ে উঠেছে তা রোধে সক্রিয় হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর