বুধবার, ৮ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঝড়-বজ্রে প্রাণহানি

ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা আসা যাওয়ার চিরায়ত সময় কাঠামো অনেকটাই ভন্ডুল হয়ে গেছে। এদের  স্বভাবও পাল্টেছে। মাঝে মধ্যেই রুদ্র রূপ ধারণ করছে প্রকৃতি। কদিন আগের টানা দাবদাহে পুড়েছে দেশের প্রাণী ও প্রকৃতি। হাঁসফাঁস করেছে গ্রাম-নগরের মানুষ। এরপরই আঘাত করল কালবৈশাখি। সোমবার রাতের ঝড় আর বজ্রের তান্ডবে ঝরে গেছে ১৬ জনের প্রাণ। চলতি গ্রীষ্ম এবং এরপর বর্ষার দিনগুলো আমাদের সামনে যেন সাক্ষাৎ আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ থেকে বাঁচার উপায় কী? প্রকৃতির প্রবল প্রতাপের কাছে মানুষ অনেকটাই অসহায়। কিন্তু সময় মতো যথাযথ আগাম সতর্কতা প্রাণ ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারে। এ জন্য আমাদের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে এই বিভাগকে সমৃদ্ধ করতে হবে। সেখানে নিয়োগ দিতে হবে উচ্চতর প্রশিক্ষিত জনবল। তথ্যপ্রযুক্তিতে তাদের তুলে নিতে হবে উন্নত দেশের পর্যায়ে। এসব বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো সচেষ্ট রয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলা এবং ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে বেশ কিছু প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে তারা। বজ্রপাত নিরোধ এবং এর প্রকোপ কমানোর একটি প্রকল্প নিয়েও কাজ চলছে। এর আওতায় বিশেষত হাওর অঞ্চলে বজ্র নিরোধ দন্ড বসানো এবং নিরাপদ ছাউনি নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলোর বাস্তবায়ন হলে কিছু সুফল নিশ্চয়ই আসবে। আর প্রয়োজন সাবধানতা। জীবন ও সম্পদ রক্ষায় নিজেদেরই সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে। প্রকৃতির বিরূপভাব লক্ষ্য করলে কিংবা আবহাওয়া দফতরের মহাবিপদ সংকেত পেলে দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। দেশের ঝড়-বৃষ্টি-জলোচ্ছ্বাসপ্রবণ এলাকায় মুজিব কেল্লা নামে আশ্রয় কেন্দ্র আছে। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা দেখা দিলে পরিবার-পরিজন ও গবাদিপশু নিয়ে দ্রুত সেখানে চলে যেতে হবে। সামান্য ঝুঁকিও নেওয়া যাবে না। তাহলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সর্বগ্রাসী থাবা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সোমবারের ঝড়-বজ্রে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পারিবারে স্বজন হারানোর ক্ষতি অপূরণীয়। কিন্তু যারা আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন এখন তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের জন্য দুবেলা খাবার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা দরকার। দিতে হবে জরুরি স্বাস্থ্যসেবাও। উপদ্রুত উপকূল আমাদের। তাই সার্র্বক্ষণিক সর্বাত্মক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে আমাদেরই।

সর্বশেষ খবর