বুধবার, ৮ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাঙালির বাতিঘর

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের প্রতি শ্রদ্ধা

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী আজ। রবীন্দ্রনাথকে বলা হয় বাঙালির বাতিঘর। বাঙালির সব অর্জনের পেছনে রয়েছে এই মহিরুহের অনুপ্রেরণাদায়ক ভূমিকা। ১২৬৮ সনের ২৫ বৈশাখ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলাসাহিত্যকে স্বদেশের গন্ডি ডিঙিয়ে বিশ্বপরিসরে তুলে ধরার কৃতিত্ব দেখান তিনি। বিশ্বকবি বাঙালিকে আপন মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হওয়ারও পথ দেখিয়েছেন। ঔপনিবেশিক সেই যুগে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করে তিনি বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতির মর্যাদা যে উচ্চতায় নিয়ে যান, তা ছিল হাজার বছরের সেরা অর্জন। রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রথম বাঙালিই শুধু নন, এশিয়া মহাদেশে তার আগে কেউ এই মর্যাদায় নিজেকে অভিষিক্ত করতে পারেননি। আড়াই হাজার বছর আগেও পদ্মা-মেঘনা-যমুনা পাড়ের এই ভূখন্ডের মানুষ আত্মপ্রত্যয়ী জাতি হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে বিদেশি শাসন ও বঞ্চনা বাঙালির গর্বিত পরিচয়কে নিষ্প্রভ করে ফেলে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর সাহিত্যকর্ম দিয়ে বাঙালিকে বিশ্বজুড়ে পরিচিত করেন। কবিগুরুর নোবেল পুরস্কার বাঙালির আত্মবিশ্বাসে যে জোয়ার আনে তার মহিমাময় প্রকাশ ঘটে প্রায় ছয় দশক পরে। এ আত্মবিশ্বাস একাত্তরে বাঙালিকে অস্ত্র ধরতে শেখায়। মহান মুক্তিযুদ্ধে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ জাতীয় সংগীত হিসেবে গৃহীত হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ছিলেন বিশ্বকবির একনিষ্ঠ অনুসারী। রবীন্দ্রনাথের জন্ম অবিভক্ত বাংলার রাজধানী কলকাতায় হলেও তাঁর পূর্বপুরুষের বসবাস ছিল তৎকালীন পূর্ববাংলা বা আজকের বাংলাদেশের খুলনায়। তার মাতুলালয় ও শ্বশুরবাড়িও একই এলাকায়। সেই অর্থে তিনি আমাদের আত্মার আত্মীয়। রবীন্দ্রনাথ মনুষ্যসত্তার বিকাশকে কাক্সিক্ষত মনে করতেন। বাঙালি মানুষ হয়ে উঠুক এটি ছিল তার ঐকান্তিক কামনা। কবিগুরুর জন্মবার্ষিকীতে আমাদের শপথ হোক- মানবিকতার পতাকাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার। হিংসা-হানাহানিমুক্ত এক বিশ্বগড়ার। শান্তি ও মানবতার কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা।

সর্বশেষ খবর