বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

অর্থনৈতিক চালচিত্র

বিনিয়োগবান্ধব পদক্ষেপ নিন

দেশের অর্থনীতি গত দেড় দশকের পথ চলার গতি ধরে রাখতে পারছে না। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বাজারে টাকার প্রবাহ কমাতে ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়ানো হলেও তাতে কোনো সুফল মেলেনি। বরং শিব গড়তে গিয়ে বানর গড়াই সার হয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে ব্যাংকের সুদহার ছিল সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ, এ বছরের মার্চে তা ১৩ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। ফলে শিল্পের উৎপাদন খরচ বেড়েছে আগের চেয়ে। এমনিতেই জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। ব্যাংক ঋণের সুদহার বৃদ্ধি বিনিয়োগকারীদের হাত-পা বেঁধে দেওয়ার বিপদ সৃষ্টি করেছে। ফলে কর্মসংস্থানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি কমানোর লক্ষ্যে হরেক কৌশল অবলম্বন করা হলেও এর হার এখন ১০ শতাংশের কাছাকাছি। অর্থনীতি হলো সবকিছুর আয়না। অর্থনীতি ভালো থাকলে ভালো থাকে সাধারণ মানুষ। গত দেড় দশক অর্থনীতি ভালো ছিল বলেই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার গ্যারান্টি অর্জিত হয়েছে। দেশের মানুষ টানা কোনো সরকারকে দেড় দশকের বেশি সময় মেনে নিয়েছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুবাতাস থাকার বদৌলতে। দেশের অর্থনীতিতে মন্দাবস্থার কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে ৪০ শতাংশের কম। একই সময়ে রাজস্ব ঘাটতি পৌঁছেছে ২৫ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। মন্দার কারণে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমানের ধস ঠেকিয়ে রাখা যচ্ছে না। গত দুই বছরেই টাকার মান কমেছে ৩০ শতাংশের বেশি। করোনা মহামারি বিশ্ববাসীকে জিম্মি করে ফেলেছিল নির্দয়ভাবে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে এ আপদ ছড়ি ঘুরিয়েছে। তা না কাটতেই ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির ওপর যে ধকল চাপিয়েছে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর তার দ্বিতীয় কোনো নজির নেই। গাজা যুদ্ধ সংকটকে ভয়াবহ করে তুলেছে। এ অবস্থায় অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকারকে বিনিয়োগবান্ধব নীতি গ্রহণ করতে হবে। কর্মসংস্থানের গতি বাড়াতে এর কোনো বিকল্প নেই। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্যও তা খুবই জরুরি। এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর