শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ডলার সংকট

সরকারের নজরদারি বাড়াতে হবে

আইএমএফের পরামর্শে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ পদ্ধতি চালুর প্রথম দিনেই ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমেছে ৭ টাকারও বেশি। ক্রলিং পেগ পদ্ধতি দেশের অর্থনীতির জন্য আদৌ সুফল বয়ে আনবে কি না তা নিয়ে শুরুতেই সংশয় দেখা দিয়েছে। এর ফলে আমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে। ক্রলিং পেগ দেশের অর্থনীতির জন্য কী ফল বয়ে আনবে তা বলার সময় এখনো আসেনি। বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে ডলারের ওপর নির্ভরশীল। ডলার বিশ্বজুড়ে আদানপ্রদানের স্বীকৃত মুদ্রা হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর থেকে। সামরিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে গত আট দশকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী গড়ে উঠলেও মার্কিন মুদ্রা ডলারের যুৎসই বিকল্প গড়ে ওঠেনি। গত ২৫ মাসে মার্কিন মুদ্রার বিপরীতে টাকার দাম কমেছে ৩৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। পরিণতিতে প্রায় সব পণ্যের দামও বেড়েছে একইভাবে। ব্যাংকে সাধারণ মানুষের যে অর্থ জমা ছিল ২৫ মাসের ব্যবধানে তার প্রকৃত মূল্য কমেছে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি। তারপরও আইএমএফের প্রেসক্রিপশনের ঢেঁকি সরকার গিলতে বাধ্য হয়েছে ৪৭০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুত ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেতে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গ্রহণযোগ্য মাত্রায় ধরে রাখার গরজে। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার কেনাবেচায় ‘ক্রলিং পেগ’ চালুর সঙ্গে সঙ্গে আইএমএফ তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার দিতে সম্মতি জানিয়েছে। ক্রলিং প্রথা দেশের অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে যদি এ প্রথার কারণে হুন্ডি অনেকাংশে রোধ করা যায়। ব্যাংক রেট ও খোলাবাজারে ডলারের দাম দুই রকম থাকায় গত দুই বছর ছিল হুন্ডিবাজদের সুদিন। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়লেও তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাড়ার বদলে কমেছে। দেশের কোন কোন পরিবার প্রবাসী আয়ের ওপর নির্ভরশীল তা জানা সরকারের জন্য খুব একটা কঠিন নয়। সে ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ালে ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে টাকার বিনিময় হার ধরে রাখা সম্ভব হবে। রোধ করা যাবে মূল্যস্ফীতি।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর