বাজারভিত্তিক সুদহার ও ডলারের দাম ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে নির্ধারণ দেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। বাজারভিত্তিক সুদের ফলে সব ধরনের ঋণের সুদহার বাড়বে এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে শিল্পোদ্যোক্তাদের মধ্যে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আভাস দেওয়া হয়েছে- এ পদ্ধতি মুদ্রানীতি ও মূল্যস্ফীতি দুটিই রোধ করবে। সুদহার বাজারভিত্তিক করায় মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে উৎসাহী হবে। মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসে যা অবদান রাখবে। ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করা দেশের অর্থনীতির প্রধান শত্রু হুন্ডি নামের ভয়াল দৈত্যের থাবা নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখবে। ১ কোটিরও বেশি প্রবাসী যাদের একটা বড় অংশ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠান, তাদের অনেকে এখন ব্যাংকিং খাতে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহবোধ করবেন। ডলারের দাম বাজারভিত্তিক হওয়ায় সংকটও কমে আসবে। বাজারভিত্তিক সুদহার এবং ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে ডলারের দাম নির্ধারণ ছিল আইএমএফের পরামর্শ। বিশ্বের বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থার কাছ থেকে ঋণ পেতে পূর্বশর্ত হিসেবে এমন ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়। আইএমএফ তার দেওয়া ঋণ যাতে সুদাসলে সময়মতো ফিরে পায় তা নিশ্চিত করতেই ঋণগ্রহীতা দেশের অর্থনীতির ভুলত্রুটি সংশোধনের ব্যবস্থাপত্র দেয়। আর্থিক সংস্থাটি ইতোমধ্যে আভাস দিয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বের গুটিকয় বিকাশমান অর্থনীতির একটি। ২০২৮ সালে বিশ্বের ২০০-এর বেশি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ১৯তম স্থানে পৌঁছাবে। এজন্য তারা দৃশ্যত হুন্ডির টুঁটি চেপে ধরার পরামর্শ দিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ডলারের দাম বাজারভিত্তিক হওয়ায় সংকটাবস্থা কেটে যাবে। গার্মেন্টসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীদের মধ্যে রপ্তানিকৃত পণ্য বাবদ প্রাপ্ত অর্থের একটা অংশ বিদেশে রাখার যে প্রবণতা রয়েছে তা রোধ হবে। বিদেশে অর্থ পাচার কমে আসবে। পাশাপাশি অর্থনীতিতে সুবাতাস আনতে ব্যাংকিং খাতের সংস্কারেও জোর দিতে হবে। এজন্য থামাতে হবে খেলাপি ঋণ নামের আরেক দৈত্যের দৌরাত্ম্য। তা সম্ভব হলে সৎ ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণ পাওয়ার সুযোগ বাড়বে। বাড়বে কর্মসংস্থানের সুযোগও।