রবিবার, ১২ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

মাদক মামলা

দ্রুত বিচারের বিকল্প নেই

মাদক সিন্ডিকেট শক্তিশালী। তাদের হাত দীর্ঘ। বিস্তার দেশজুড়ে। প্রভাব প্রায় সর্বত্র। সেই মাদকের রসায়ন মানুষের শরীর ও মনের ওপর যে তন্দ্রাচ্ছন্নতার প্রভাব ফেলে, এর প্রতি তীব্র আসক্তি ব্যক্তিকে তিলে তিলে চরম শারীরিক ও আর্থিক ক্ষতির মুখে ঠেলে দেয়। ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলে পরিবার, পরিপার্শ্ব ও সমাজে। অথচ অনাদিকাল ধরে নিয়ন্ত্রিত পন্থায় নানা ধরনের মাদক উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার চলছে প্রায় সব সমাজে। এর অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও নির্বিচার ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিশোর ও তরুণ শ্রেণি। বাদ যাচ্ছেন না বয়স্ক নারী-পুরুষও। এদের নাগালে মাদকদ্রব্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে অবৈধ প্রক্রিয়ায়। এর প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় ঘাটতি নেই। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদকবিরোধী অভিযান চলে। অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার, কারবারি ও সেবনকারীদের আটকও করা হয়। যথারীতি মামলাও হয়। এরকম মামলার পাহাড় জমে উঠেছে। বিচারাধীন মাদক মামলার সংখ্যা প্রায় ৮৩ হাজার। সমস্যাটা এখানেই। তদন্তে ফাঁক ও সাক্ষীদের অনুপস্থিতির কারণে নিষ্পত্তি না হওয়ায় মামলার সংখ্যা বাড়ছে। চার্জশিটের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সাক্ষ্য এবং জব্দ আলামতের তালিকার গরমিলসহ বেশ কিছু কারণে সাজা থেকে বেঁচে যাচ্ছে মাদক মামলার অনেক আসামি। এর অন্যতম কারণ- মাদকের পেছনের সিন্ডিকেট। তারাই কলকাঠি নাড়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের মাদকবিরোধী সব পদক্ষেপে। মাদক মামলার বিচারে সাক্ষী পাওয়া যায় না। যারা আসে তারাও ঠিকমতো সাক্ষী দেয় না। মামলার নিষ্পত্তি হয় না। এ ছাড়া আদালতের অপর্যাপ্ততাও রয়েছে। এতে জমে মামলার জট। অপরাধীদের সাজা বিলম্বিত হওয়ায় মাদকের থাবা বিস্তৃত হয়। কারবারিদের দৌরাত্ম্য চলতেই থাকে। সর্বনাশা এ মাদক সন্ত্রাস থেকে সমাজ রক্ষায় দ্রুততম বিচার নিশ্চিত করা আবশ্যক। প্রয়োজনে বিশেষ আদালতের ব্যবস্থা করতে হবে। এটা অত্যন্ত জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর