শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঝুঁকিপূর্ণ রেস্টুরেন্ট

টাইমবোমার মতোই বিপজ্জনক

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে গত ২৯ ফেব্রুয়ারির অগ্নিকাণ্ডে মারা যান শিশু নারীসহ প্রায় অর্ধশত মানুষ। আহতের সংখ্যাও কম নয়। ভবনটি ছিল রেস্টুরেন্টে ঠাসা। ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাণিজ্যিক ভবনে মৃত্যুঝুঁকির বিষয়টি সামনে আসে। ভবনটিতে ছিল না কোনো অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক সাফাই গেয়েছিল, ভবনটিতে রেস্তোরাঁ বা পণ্য বিক্রয় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে তিনবার চিঠি দেওয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, রাজধানী ঢাকার অধিকাংশ ভবন তৈরি হয়েছে রাজউক ও ফায়ার সার্ভিসের নিয়মনীতি পুরোপুরি না মেনে। এসব ভবনে অগ্নিসংকেতের ব্যবস্থা নেই। নেই পর্যাপ্ত পানি ও আগুন নেভানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। থাকে না পর্যাপ্ত সিঁড়ি। আবার অনেক সিঁড়ি উন্মুক্ত নয়। বাণিজ্যিক জননিরাপত্তার দিকে ভবন মালিকদের কোনো গরজ নেই। সব মিলিয়ে ঢাকার বহুতল বাণিজ্যিক ভবন বিশেষত রেস্টুরেন্টগুলো অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে এবং এগুলো যেন এক একটা মৃত্যুফাঁদ। ভবন মালিকরা লাভের স্বার্থে ছাদও ভাড়া দিয়ে দেন। যেগুলোর অধিকাংশই রেস্টুরেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ছাদে যে আশ্রয় নেবে সেই সুযোগও থাকে না। গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডের পর সাঁড়াশি অভিযানে নামে রাজউক, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিসসহ কয়েকটি সংস্থা। সে অভিযানে শতাধিক রেস্টুরেন্ট বন্ধ হলেও কিছুদিন পর তা থমকে যায়। বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের দুই মাস যেতে না যেতেই সেই পুরনো রূপে ফিরেছে ঝুঁকিপূর্ণ রেস্টুরেন্ট ভবনগুলো। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া না হলেও প্রায় প্রতিটি রেস্টুরেন্টে চিরচেনা ভিড় ফিরে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে রাজউক, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশনসহ সব কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় রাজধানীতে গড়ে উঠেছে ‘টাইমবোমা’র সঙ্গে তুলনীয় বিপজ্জনক অসংখ্য রেস্টুরেন্ট। বেইলি রোড ট্র্যাজেডির পর সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো সক্রিয় হয়েছিল অনেকটা আই ওয়াশের মতো। আরেকটি ট্র্যাজেডি না চাইলে ঝুঁকিপূর্ণ রেস্টুরেন্টগুলোর বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর