শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভয়াবহ দাবদাহ

বনায়ন ও জলাশয় রক্ষায় নজর দিন

দুই হাজার বছরে এমন গরম দেখেনি বিশ্ব। উত্তর গোলার্ধে দূর অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় ২০২৩-এর গ্রীষ্ম বেশি গরম ছিল। গবেষণা বলছে, এবারের গ্রীষ্ম গত বছরের উষ্ণতাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। এল নিনো আবহাওয়া চক্রের সঙ্গে মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্ব উত্তপ্ত হতে থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে গবেষকদের ধারণা। এর প্রভাবে অস্বাভাবিক গরম ও খরা; অসময়ে বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। আশঙ্কা শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশেও এর আঘাত আসতে পারে। আসছেও। তার কিছু আলামত ইতোমধ্যেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সামান্য কয়েক দিনের ব্যবধানে ফের দাবদাহের কবলে পড়েছে দেশ। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় তাপমাত্রা উঠেছে প্রায় ৪০ ডিগ্রির কাছে। ৬৪-এর মধ্যে ৪২ জেলায় রয়েছে মৃদু থেকে মাঝারি দাবদাহ। তার দৌরাত্ম্যে পাঁচ বিভাগে হিট অ্যালার্ট জারি করতে হয়েছে। তীব্র গরমে হিটস্ট্রোকে মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। নানা অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে অনেক মানুষ। দীর্ঘ দিনভাগে এখন আকাশে তীব্র রোদের আগুন, প্রকৃতিতে যেন লু হাওয়া বইছে। এরকম পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকার জন্য সবাইকে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। শ্রমজীবী মানুষকে তো কাজে বেরোতেই হবে। তারা যতটা সম্ভব রোদ বাঁচিয়ে কাজ করতে পারলে ভালো। শরীরে যেন জলশূন্যতা সৃষ্টি না হয় সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে। এ ব্যাপারে জনসচেতনতা তৈরির প্রচারণা প্রয়োজন। শিল্পায়ন ও নগরায়ণের জেরে বিশ্বজুড়েই পরিবেশের সংকট দেখা দিয়েছে। ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। প্রকৃতি এত বিরাট এবং ব্যাপক আর তার শক্তি এতটাই সর্বপ্লাবী যে, মানুষের সব প্রচেষ্টাই তাতে খড়কুটোর মতো ভেসে যায়। প্রকৃতির তাণ্ডবে বিধ্বস্ত বিপর্যস্ত হয় জ্ঞান-গরিমায়, ধনে-প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ সব উন্নত দেশও। প্রকৃতির রুদ্ররূপ থেকে রক্ষা পেতে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিতে হবে। প্রচুর গাছ লাগিয়ে বিস্তৃত বনভূমি গড়ে তুলতে হবে। জলাশয় রক্ষা এবং নতুন জলাধার সৃষ্টি করতে হবে। রুষ্ট প্রকৃতিকে নানাভাবে শীতলতার পরশ দিয়ে সহনীয় পর্যায়ে আনতে এগুলো কিছুটা ভূমিকা রাখতে পারে।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর