সোমবার, ২০ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি

টাকার অবমূল্যায়ন রুখতে হবে

ডলার সংকটে বেড়ে গেছে উৎপাদন খরচ। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক থেকে শুরু করে সিংহভাগ শিল্পপণ্যের কাঁচামালসহ নানা উপকরণ আনতে হয় বিদেশ থেকে। টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় প্রতিটি পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে বিপুলভাবে। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠেছে ব্যাংকঋণের সুদের হার বৃদ্ধি। জ্বালানি ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি সমানভাবে ভোগাচ্ছে উদ্যোক্তাদের। ঋণের সুদহার বৃদ্ধিতে ব্যবসার ব্যয় বেড়েছে। বাড়তি এ ব্যয়ের চাপ পড়ছে ব্যবসায়ী-ভোক্তা সবার ওপর। ফলে দেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি উসকে দিচ্ছে। সংকটের মুখে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান লোকসান ঠেকাতে তাদের উৎপাদিত শিল্পপণ্যের উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। বেসামাল বিনিময় হারের কারণে বিপাকে পড়েছেন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকরা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের শর্ত মেনে গত ৮ মে ব্যাংকঋণের সুদহার বাজারনির্ভর করে প্রজ্ঞাপন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও চলতি অর্থবছরের শুরুতেই ঋণের সুদহার বাড়ানোর নীতি গ্রহণ করে তারা। ওই সময় ঋণের সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদহারের সীমা তুলে নেওয়া হয়। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে এই সীমা তুলে দেওয়ায় সুদহার ৯ থেকে বেড়ে ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশে ঠেকে। বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পর গত এক সপ্তাহে অনেক ব্যাংকঋণের সুদহার ১৫ শতাংশে উন্নীত করেছে। ডলারের মূল্য নির্ধারণে ক্রলিং পেগ নীতি অবলম্বন করায় এক দিনের ব্যবধানে টাকার মূল্যমান ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ অবমূল্য করা হয়। ডলারের দাম ১১৭ টাকা নির্ধারণ করায় আরও গভীরতর হয় সংকট। ডলারের অধিমূল্যের পাশাপাশি ব্যাংকঋণের হার বৃদ্ধির ধকল শুধু ব্যবসায়ী নয়, বড় মাপে ভোক্তাদের ওপরও বোঝা বাড়াচ্ছে। সংকট নিরসনে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান ধরে রাখতে ফলপ্রসূ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিনিয়োগবান্ধব নীতি গ্রহণ করে অর্থনীতিতে প্রাণসঞ্চারের চেষ্টা চালাতে হবে একাগ্রভাবে।

সর্বশেষ খবর