সোমবার, ২০ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাঘ প্রত্যঙ্গের কারবার

প্রতিরোধ গড়তে হবে সবাইকে

কথায় বলে টাকা দিলে নাকি বাঘের দুধও পাওয়া যায়। বাস্তবতা বলছে- এ প্রবাদ মিথ্যা নয়। বাঘের চামড়া, হরিণের শিং ঘরের দেয়ালে টাঙিয়ে রাখা একসময় ধনীদের সামাজিক আভিজাত্যের পরিচয় বহন করত। এই মানসিকতা কিছু সামর্থ্যবান মানুষের মধ্যে এখনো আছে। সে কারণেই টিকে আছে বাঘের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অবৈধ কারবার। এজন্য চলছে বাঘ হত্যা। দেশের ধনীক শ্রেণি, সচ্ছল প্রবাসী এবং বিদেশি ধনবানরা বাঘের চামড়া বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রধান ক্রেতা। মোটা টাকা দিয়েই তারা এগুলো কিনছেন, যদিও এই বেচাকেনা নিষিদ্ধ। বিমান ও সমুদ্রবন্দর এবং স্থলসীমান্ত দিয়ে বাঘের শরীরের বিভিন্ন অংশ পাচার হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী অনেক দেশ থেকে পাচার হয়েও এ দেশে আসছে। স্থানীয় চোরাকারবারিরা বিশ্বব্যাপী একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে যুক্ত। ফলে অবৈধ এ কারবারের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বভাবতই সুন্দরবনের বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব বর্তমানে হুমকির মুখে। বাঘের চামড়া, হাড়, দাঁত এবং শুকনো মাংস প্রায়ই দেশের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে পাচার করা হয়। এর পেছনে কাজ করে একটি আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট। যারা বন বিভাগ এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দিয়ে কিংবা অসৎ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অপকর্মটি করে চলেছে। এদের অপতৎপরতা বন্ধ করতে হলে সব মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। চোরা শিকারি ও পাচারকারীরা যেন প্রথমেই সামাজিক প্রতিরোধের মুখে পড়ে। বন বিভাগের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে হবে। সেই সঙ্গে বিরাজমান বন্যপ্রাণী আইনের যথাযথ প্রয়োগও প্রয়োজন। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও মায়াবী চিত্রল হরিণের আবাসস্থল। বাঘের অস্তিত্ব বিপন্ন হলে সুন্দরবনও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রুদ্র প্রকৃতির বাধাহীন ছোবলে বিপন্ন হবে স্থানীয়দের জীবন। ফলে ঐতিহ্যের সুন্দরবন এবং তার ভয়ংকর সুন্দর বাঘ রক্ষায় আন্তরিক, সৎ, সচেতন ও সক্রিয় হতে হবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে।

সর্বশেষ খবর