বুধবার, ২২ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

পিটিয়ে খুন নির্যাতন

চাই সামাজিক প্রতিরোধ

ঠুনকো অভিযোগে মানুষ মানুষকে পিটিয়ে মারছে। পৈশাচিক নির্যাতন করছে। একদিকে মানবিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়, অন্যদিকে সামাজিক শৃঙ্খলা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এমনটা হচ্ছে। গত রবিবার রাতে ঝালকাঠির নলছিটিতে চোর সন্দেহে এক যুবককে গাছে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ফেনীতে এক কিশোরকে পায়ুপথে ব্রাশ ঢুকিয়ে নির্যাতন করেছে কয়েকজন বখাটে। এর আগে খুলনা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে মানুষের পায়ুপথে গাড়ির চাকায় হাওয়া দেওয়ার মেশিনে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা-নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। সাভারের আমিনবাজারে ২০১১ সালের ১৭ জুলাই, শবেবরাতের রাতে ছয় তরুণ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল এলাকাবাসী। যাদের নেতৃত্বে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল, বিভিন্ন সময় আদালত থেকে জামিন পেয়ে তারা এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা চালিয়েছে। প্রায় ১০ বছর পর ওই মামলায় ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৯ জনের যাবজ্জীবনের রায় হয়। কিন্তু ফাঁসির সে রায় আজও কার্যকর হয়েছে কি না সন্দেহ। ২০১৯-এর ২০ জুলাই রেনু নামের একজন মহিলা রাজধানীর বাড্ডা এলাকার এক স্কুলে গিয়েছিলেন তার সন্তানকে ভর্তির ব্যাপারে খোঁজ নিতে। ছেলেধরা বলে গুজব ছড়িয়ে তাকে সেখানে পিটিয়ে মেরে ফেলেছিল কিছু মানুষ (?)। এরকম ঘটনা দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই ঘটছে। এমন বর্বরতার দৃষ্টান্ত কম নেই অপরাধের তথ্য ভান্ডারে। সন্দেহ, অনুমান বা মনগড়া অভিযোগে অনেকেই বিচার নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। কেউ তাদের বাধা দিচ্ছে না। হয়তো সাহস পাচ্ছে না। অনেক সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সামনেই এসব ঘটছে। কোথাও তারা নিজেরাই অংশ নিচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা খরব পেয়ে যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছাচ্ছেন- তার আগেই ‘ডাক্তার আসিবার পূর্বেই রোগীর মৃত্যু’র মতো সর্বনাশটা ঘটে যাচ্ছে । এমন বর্বরতা কামনা করে না পলিমাটি গড়া এই বাংলার সংবেদনশীল সমাজ। এসব হত্যা-নির্যাতনের বিচার যদি দ্রুত এবং সে বিচারের রায় যদি স্বল্পতম সময়ের মধ্যে কার্যকর করা হয়- অপরাধীদের মনে ভয় ঢুকবে। এমন মধ্যযুগীয় বর্বরতা বন্ধ হবে। যেটা খুব দরকার।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর