বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঢাকায় পার্ক

গাছপালা নিধনের প্রবণতা নিন্দনীয়

রাজধানী থেকে ক্রমান্বয় উধাও হয়ে যাচ্ছে বৃক্ষরাজি। ইট কংক্রিটের স্তূপ হয়ে ওঠা মেগাসিটি ঢাকার পার্কগুলো গাছপালা নিধনের জন্য ছায়াঘেরা পরিবেশ হারাচ্ছে নিষ্ঠুরভাবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর ব্যস্ততম ফার্মগেট এলাকার মানুষের কাছে শহীদ আনোয়ারা পার্কটি ছিল আশীর্বাদস্বরূপ।  কয়েক বছর আগেও হাজারো মানুষ পার্কটিতে হাঁটাচলা করত সকাল-বিকাল। শিশুরা খেলত মহা উল্লাসে। কম আয়ের মানুষ ক্লান্তি দূর করতে বিশ্রাম নিত ছায়াঘেরা পরিবেশে। সবুজ গাছ-গাছালিতে ভরা ছিল পার্কটি। সময়ের ব্যবধানে সেই পার্কে সবুজের ছিটেফোঁটাও নেই। গড়ে তোলা হয়েছে দোতলা মেট্রোরেলের অফিস। রাখা হয়েছে নির্মাণসামগ্রী। একই অবস্থা হোটেল সোনারগাঁও মোড়ের পান্থকুঞ্জ পার্কটির। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি অংশ হাতিরঝিল হয়ে পান্থকুঞ্জ পার্ক থেকে পলাশী যাবে। সেই কাজের বলি পার্কের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশে কাটা পড়েছে অধিকাংশ গাছ। প্রাণহীন জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় টিকে আছে কোনোরকম।  পার্কের ভিতরে এক্সপ্রেসওয়ের কয়েকটি পিলার বসানোর কাজ চলছে। গাছ কেটে পিলার বসানোয় অনেকটা কমেছে সবুজের উপস্থিতি। রাজধানীতে পার্কের সংখ্যা এমনিতেই কম। সোয়া দুই কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ঢাকায় যে কয়টি পার্ক আছে তা অনেক দেশের ৫০ হাজার জনসংখ্যা বিশিষ্ট শহরের চেয়ে কম। নতুন পার্ক তৈরি নয়, সবুজায়নের মাধ্যমে ইট কংক্রিটের নগরীতে প্রাণসঞ্চার এবং যেসব পার্ক আছে সেগুলোর পরিবেশও ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে। যেমনটি ঘটেছে ওসমানী উদ্যানের ক্ষেত্রে। সাত বছর ধরে উন্নয়ন কার্যক্রমের নামে বন্ধ রয়েছে পার্কটি। দুই শতাধিক গাছ কেটে উন্নয়নের ক্যারিশমা দেখানো হচ্ছে। উদ্যানের জলাশয়ের একাংশ ভরাট করে পরিবেশবিরোধী আচরণের প্রতিফলন ঘটিয়েছে কর্তাব্যক্তিরা। সোয়া দুই কোটি মানুষের নগরীকে বাসযোগ্য করে তুলতে রাজধানীতে কীভাবে লাখ লাখ গাছ লাগানো যায় সে কথা ভাবতে হবে। নতুন পার্ক নির্মাণের বদলে যাচ্ছেতাইভাবে যেগুলো আছে, সেগুলো ধ্বংস এবং গাছ কাটার অবিমৃষ্যকারিতা থেকে সরে আসতে হবে। থামাতে হবে বৃক্ষ নিধনের নিন্দনীয় প্রবণতা।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর