সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

মামলাজট

বাড়াতে হবে বিচারক

বিচার প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাপী বহুল উচ্চারিত এবং সর্বজন স্বীকৃত প্রবচন হচ্ছে- ‘বিচার বিলম্বিত হওয়াই ন্যায়বিচার অস্বীকার করা।’ উনবিংশ শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ এবং ১২ বছর দায়িত্ব পালন করা প্রধানমন্ত্রী উইলিয়াম ই গ্লাডস্টোন এই উক্তিটি করলেও এ বক্তব্যের মূল সুর হাজার বছর ধরেই বিভিন্নভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। আর তা দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে উচ্চারণ করেছেন মূলত সেসব ভুক্তভোগী, যারা সময়মতো বিচার না পাওয়ায় দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত ও বঞ্চিত হয়েছেন। আমাদের ক্ষেত্রে মর্মপীড়ার কারণ, সারা দেশের আদালতে শুধু নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্টেই (এনআই অ্যাক্ট) পৌনে ৩ লাখের বেশি মামলা ঝুলে আছে। বছরের পর বছর ধরে নিষ্পত্তি না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বিচারপ্রার্থীদের। আদালতে ঘুরে ঘুরে তাদের সময় ও অর্থের ঘোর অপচয় হচ্ছে। বিষয়টা হচ্ছে- ব্যক্তিগত লেনদেন থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি হিসেবে দেওয়া হয় ব্যাংক হিসাবের চেক। সেই লেনদেনে যখন অঙ্গীকার ঠিক থাকে না, তখন এনআই অ্যাক্টের ধারায় মামলা হয়। এমন মামলা অসংখ্য। আর এর বিচার বিলম্বিত হওয়ায় চেক প্রতারণার এসব মামলা এখন ব্যক্তি, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ মামলায় অনেক সময় আসামি গ্রেফতার হলেও শাস্তির নজির খুবই কম। অন্যদিকে ডিজঅনার হবে এমন চেক দেওয়া ভয়াবহ অপরাধ হলেও এ মামলায় সে অনুযায়ী শাস্তি নেই। যেটুকু শাস্তির বিধান আছে,  মামলার দীর্ঘসূত্রতায় তাও আটকে যায়। মামলাগুলো স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করতে না পারলে এ অপরাধ কমবে না। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট আইনের কিছু সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন করে হলেও প্রতারক ও অপরাধীদের দ্রুত দণ্ড কার্যকর নিশ্চিত করতে হবে। নিরীহ, নিরপরাধ মানুষের হয়রানি ও ক্ষতি রোধের ব্যবস্থা করতে হবে। বিচারক এবং এজলাসের সংখ্যা বাড়িয়েও জমে যাওয়া লাখ লাখ মামলা নিষ্পত্তিতে গতিসঞ্চার করা যেতে পারে। যেটা এখন জরুরি।

সর্বশেষ খবর