মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

দেশে চাই ন্যায় ও সত্যের সুবাতাস

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

দেশে চাই ন্যায় ও সত্যের সুবাতাস

উপজেলা নির্বাচন চলছে। যেহেতু সবই আওয়ামী লীগ, সেহেতু ভোট বাক্স ছিনতাই অথবা সবই জাল ভোট তেমন একটা হচ্ছে না। তবে নির্বাচন সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। ২০-২৫, খুব বেশি হলে ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ছে না। আমরা সব সময়ই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি, এবারও করছি। কিন্তু ঘ্যাগের ওপর তারাবাতির মতো নির্বাচন কমিশনের নানা সিদ্ধান্ত বড় বেশি হাস্যকর ও একেবারেই বেমানান। নির্বাচন এবং নির্বাচন কমিশন নিয়ে একটি চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নানাদিকের মৃত্যু সংবাদ কেন যেন একেবারে গলা চেপে ধরেছে। উপজেলা নির্বাচন সম্পর্কে কী বলি? উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর জামানত ১ লাখ টাকা, অন্যদিকে সংসদ সদস্যদের কুড়ি হাজার। পাঠক বুঝুন, দেশের সর্বোচ্চ পরিষদের জামানত ২০ হাজার আর একটা চতুর্থ বা পঞ্চম স্তরের নির্বাচনের জামানত ১ লাখ টাকা! এমন খেয়ালখুশি মতো দেশ চলে, রাষ্ট্র চলে? কিন্তু চলছে, কিছুই করার নেই। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বলা হলো, পোস্টার হবে সাদা-কালো। উপজেলায় নানা রংবেরঙের পোস্টার। ঝড়-বাদলের দিন, পোস্টার ঢেকে দেওয়া যাবে না। জাতীয় নির্বাচনে বলা হলো কোনো দেয়ালে পোস্টার লাগানো যাবে না, সুতা বা রশি দিয়ে ঝুলিয়ে দিতে হবে। উপজেলায় সব চলে সব চলবে। এ এক মাদারীর খেল। প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের দিন ঘুম থেকে উঠে ঢুলো ঢুলো চোখে একবার বলেন- ২৫-২৬ শতাংশ ভোট পড়েছে, আবার বলেন না না, ৪০ শতাংশ। এমন বেপরোয়া লাজ লেহাজহীন সরকারি কোনো সংস্থা দেশের সুনাগরিকরা কোনোভাবেই আশা করতে পারে না। কিন্তু তবু চলছে, কী আর করা?

কালিহাতী উপজেলায় আমাদের সব থেকে ছোট ভাই আজাদ সিদ্দিকী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিল। ভোট হয়েছে ২১ মে। অনেক ভোটেই জিতেছে। বিশেষ করে কালিহাতী সদর, নাগবাড়ি, বল্লা, ছাতিহাটি কেন্দ্রে প্রায় সবাই ভোট দিয়েছে। ’৭০ সালে লতিফ ভাই যখন প্রথম নির্বাচন করে তখন যে ধরনের ভোট পড়েছিল, ঠিক সেই রকম। যদিও এখনকার চেয়ে তখন দশ ভাগের এক ভাগ ভোটও ছিল না। কিন্তু পরিমাণটা ছিল একই রকম। শুনেছিলাম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এলেঙ্গা, সহদেবপুর, দশকিয়ায় সব ভোট নিয়ে  নেবে। সত্যিকার অর্থে তা হয়নি। প্রশাসনও তাদের অমন করতে দেয়নি, আর সাধারণ ভোটারদেরও তাদের প্রতি তেমন আগ্রহ ছিল না। ভাবতে সত্যিই অবাক লাগে, স্বাধীনতার সময় যারা ভাঙা কাপে চা খেতে পারত না তাদের সন্তান-সন্ততিরা হঠাৎ কিছু পয়সাপাতি রোজগার করে বড় বেশি ক্ষমতাবান হয়েছে। এখান থেকে মুক্ত হতে না পারলে সমাজ ভেঙে পড়বে। এত রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতাই হবে হুমকির সম্মুখীন। আগামী ৫ জুন টাঙ্গাইলে সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচন। আমাদের দলীয় প্রতীক নিয়ে সখীপুরে সানোয়ার হোসেন সজীব নির্বাচন করছে। অন্যদিকে সরকারি ছায়ার প্রার্থী পাঁচজন। এসব প্রার্থী মনে করছে দেশটা তাদের নিজেদের সম্পত্তি। তাই তারা যা চাইবে তাই হবে। আমার মনে হয়েছে খাজনা খারিজ করে সখীপুরটা কারও হাতে দিয়ে দেওয়া উচিত না। সখীপুরের পাহারাদার থাকা দরকার। ’৯৯ সালে ভোট চুরির বিরুদ্ধে আমরা গামছা প্রতীক জন্ম দিয়েছিলাম। সেই জাতীয় প্রতীক নিয়ে সানোয়ার হোসেন সজীব নির্বাচন করছে। শুধু আলসামি ঝেড়ে ফেলে গামছার সমর্থকসহ নেতা-কর্মীরা ভোট কেন্দ্রে গেলে ইনশাল্লাহ বিপুল ভোটে সানোয়ার জয়ী হবে।

অন্যদিকে বাসাইলে আমাদের সন্তোষজনক প্রার্থী ছিল না। তাই একজন ভদ্র শালীন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে কাজী শহিদুল ইসলামকে সমর্থন জানিয়েছি। বেশ অনেক বছর কাজী শহিদকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপি দলীয় হলে আমরা হয়তো সমর্থন করতাম না। আর এক প্রার্থী কাজী অলিদ, যে প্রাক্তন সংসদ সদস্য শওকত মোমেন শাজাহানকে আওয়ামী লীগ অফিসে চেয়ার তুলে মারতে গিয়ে যে অপমান করেছিল সেই দুঃখে সে রাতেই মারা যায়। শাজাহান ছিল আমার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ছেলে জয়ের জন্ম হয়নি, এমনকি তার বাবা-মার বিয়েও হয়নি। তাই শওকত মোমেন শাজাহানের ছেলে মাননীয় সংসদ সদস্য জয় বাবার হত্যাকারীর সঙ্গে আপস করতে পারে। কিন্তু আমি পারি না। তাই তার প্রতি সমর্থনের কোনো প্রশ্নই আসে না। অন্যদিকে হাজী গাউস ছিল আমাদের কর্মী। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ শেষে ’৯০-এ দেশে ফেরার পর গাউসকে খুবই ছোট দেখেছি। এখন বাসাইল আওয়ামী লীগের সভাপতি কিছুদিন আগে দেখা করতে এসেছিল। আওয়ামী লীগের সভাপতি না হলে হয়তো চিন্তা করা যেত। কিন্তু তাকে চিন্তা করতে পারি না। আরেক প্রার্থী বাসাইল উপজেলা সহসভাপতি হেলিকপ্টার মার্কার শাহাদৎ। তাকেও সমর্থন করার কোনো যুক্তি খুঁজে পাইনি। সেজন্য কাজী শহিদকে কাপ-পিরিচ মার্কায় সমর্থন করেছি। সবার কাছে আমার অনুরোধ স্বাধীনতা যুদ্ধে ভূমিকা রেখে মা-বোনের ইজ্জত সম্ভ্রম বাঁচিয়ে থাকলে কাজী শহিদকে কাপ-পিরিচে একটা ভোট দেবেন।

আগেই বলেছি, মন বড় বেশি ভারাক্রান্ত। ’৭৫-এর প্রতিরোধ যোদ্ধা মানু মজুমদার কদিন আগে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভারতে মারা গেছে। সংসদে থাকার সময় একবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন শেখ হাসিনা আমেরিকা গিয়েছিলেন। তখন তার সফরসঙ্গী ছিলেন খুব সম্ভবত ৫২ জন। ৫২ নম্বরে মানু মজুমদারের নাম ছিল, পদবি ছিল ভৃত্য। আমাকে বড় আঘাত করেছিল। অনেক দিন নেত্রীর বাড়িতে মানু মজুমদার থেকেছে। ড. ওয়াজেদ দুলাভাইয়ের মৃত্যুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন হাসিনার সঙ্গে আমরা স্বামী-স্ত্রী সমবেদনা জানাতে গেটে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছিলাম। একসময় মানুকে অবলীলায় গেট দিয়ে যেতে দেখলাম। এরপর গিয়েছিলাম সুধা সদনে। সেখানেও বাড়িতে ঢুকতে পারিনি, শোক বইয়ে স্বাক্ষর করতে পারিনি। ফিরে এসেছিলাম মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের বাড়িতে। কিছুক্ষণ পর মাগুরার আসাদ ভাইয়ের ছেলে শেখর ফোন করেছিল, ‘চাচা, সুধা সদনে তেমন কেউ ছিল না। তাই আপনি যেতে পারেননি। নেত্রী বলেছেন, যে কোনো সময় আপনি সুধা সদনে গিয়ে শোক বইতে স্বাক্ষর করে আসতে পারেন।’ আমার খুব একটা ইচ্ছে ছিল না। তারপরও বিকালের দিকে গিয়েছিলাম। শোক বইয়ে স্বাক্ষর করে এসেছিলাম। সেই মানু ফাঁকি দিয়ে আমার আগেই চলে গেল। ভালো লাগছে না। স্রষ্টা তার মঙ্গল করুন।

বর্তমান পৃথিবীর বড় বিস্ময় ইরানের ইসরায়েলে নির্দিষ্ট নিশানায় ড্রোন হামলা। যা নিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ভীষণ আলোচিত হয়েছিলেন। সেদিন তিনি এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পরপারে চলে গেছেন। ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলতে আমার বুকে বাধে। হেলিকপ্টারটা ছিল অনেক পুরনো আমেরিকার তৈরি। আগে-পিছে আরও দুটি হেলিকপ্টার ছিল। যেভাবে বলা হচ্ছে, মাঝখান থেকে মুহূর্তে হারিয়ে গেল। আগে-পিছের কেউ বুঝলেন না। এটা কোনো যুক্তি নয়। এটা একটা খোঁড়া যুক্তি। সেকেন্ডের মধ্যে হারিয়ে যায় আর আগে-পিছে কেউ বুঝতে পারে না এটা তাদের কথা হতে পারে ব্যাখ্যা হতে পারে। কিন্তু ব্যাপারটা সত্য নয়। হয় জ্ঞানের অভাব, না হয় বিচার-বিবেচনার অভাব। ইরানের আরও সাবধান হওয়া উচিত ছিল। সে যাই হোক রাইসির এই মৃত্যু কোনো কাপুরুষের মৃত্যু নয়, এটা এক সুুপুরুষের মৃত্যু। এ মৃত্যু ইসলাম জাহানকে আরও শক্তিশালী করবে। কারণ এটা তো সর্বজনবিদিত, ‘ইসলাম জিন্দা হোতা হায় হার কারবালা কে বাদ।’ তাই সব সময় মনটা খুঁত খুঁত করছিল। এর মধ্যে আবার সংসদ সদস্য আনারের হত্যা। আনারের হত্যা আমাদের কিছু না কিছু ভাবতেই হবে। বোনকে নিয়েও আমি ভীষণ চিন্তিত। শেষ পর্যন্ত তার নেতৃত্বে দলে ওসব কী ধরনের লোক জায়গা পেয়েছে ভাবতে কেমন যেন লাগে। আজ কদিন থেকে নানা চ্যানেলে নানা ছবি দেখছি, বর্ডার ক্রস করেছেন একা ভ্যানে চড়ে। বাংলাদেশের পতাকাবাহী ভ্যান। কেন অমন নকশা হলো কিছুই বুঝতে পারলাম না। দীর্ঘদিনের ভারতে যাতায়াত। বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যার পর আমি তো অনেক বছর ভারতে ছিলাম। এভাবে সোনা চোরাচালানে ২-৪’শ কোটি টাকার ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে এমন নৃশংস হত্যা কল্পনারও বাইরে। হ্যাঁ, যারা মাংস খায় তারা মাংস কেটেকুটে টুকরো করে রান্নাবান্না করে খায়। কিন্তু মানুষের মাংস এভাবে টুকরো করে হলুদ মাখিয়ে বাইরে নেওয়া বা রান্না করা এ তো কিয়ামতের আলামতের চেয়েও ভয়াবহ। কতটা জিঘাংসা থাকলে কেউ বা কেউ কেউ এমন আচরণ করতে পারে। মনে হয় আনারের ছেলে নেই। মেয়েদের দেখতে পাচ্ছি। এমন জীবনের চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো। যেভাবে যা শুনছি, পত্রপত্রিকায় পড়ছি যারা লিখছেন তাদের লেখা পড়ে মনে হয় তারা নিজেরা সব দেখেছেন, দেখে দেখে লিখছেন। ভারতীয় গোয়েন্দারা আমাদের দেশে এসেছিলেন, আমাদের গোয়েন্দারা ভারতে গেছেন। কে কতটা কী করতে পারবে তা তারাই জানেন। কিন্তু আমার কাছে তেমন কিছু মনে হয় না। আনারের লাশের কোনো আলামত না পাওয়া গেলে আইনত মামলাটি খুবই দুর্বল হবে। আমি একজন আইনজ্ঞের ছেলে। আমার বাবাকে দীর্ঘ ৬০ বছর ক্রিমিনাল প্র্যাকটিস করতে দেখেছি। তাতে যে কোনো খুনি মামলায় আলামত হিসেবে লাশের গুরুত্ব খুব বেশি। দেখা যাক, কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে গড়ায়।

দেশে বলতে গেলে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় প্রাক্তন পুলিশ প্রধান বেনজীরকে নিয়ে। আমি বেনজীরকে খুব বেশি কাছে থেকে দেখিনি। হঠাৎই কয়েক বছর আগে এক দিন পূর্ত মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলাম। একসময় সখীপুরের ইউএনও শহিদুল্লাহ তখন পূর্ত সচিব। তাই গিয়েছিলাম কাদেরিয়া বাহিনী জাদুঘর নিয়ে কথা বলতে। লম্বা মানুষ সোজা সরল হয়। তারা অনেক কিছুই বোঝে না, বুঝতে চায় না। স্বাস্থ্যগত কারণে শারীরিক গঠনে এসব সোজা সরল মানুষ অনেক প্যাঁচপুচের ধারেকাছে যান না। আমিও ঠিক তেমনি। খুব একটা প্যাঁচপুচ পছন্দ করি না। মহান আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি ভরসা করে এতটা পথ পারি দিয়েছি। বাকি পথটুকু ইনশাল্লাহ আল্লাহ রাসুলের ভরসাতেই পারি দেব। আজীবন বিশ্বাস করি, বেশি বড় হইও না ঝড়িতে ভাঙবে মাথা, বেশি ছোট হইওনা ছাগলে খাবে পাতা। বেনজীরের তেমনটাই হয়েছে। সেদিন সচিব শহিদুল্লাহর ঘরে বেনজীরকে আমার ভালো লাগেনি। ১০-১২ জন পুলিশ অফিসার নিয়ে যেভাবে এসেছিলেন সেভাবেই চলে গিয়েছিলেন। একটা মানুষের কত কী লাগে? ক্ষমতা থাকলেই অন্যায় করতে হবে এটা তো ভালো কথা নয়। আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে খুব একটা বেশি অন্যায়কারীকে পার পেতে দেখিনি। আগে হোক পরে হোক ধরা তাকে পড়তেই হয়েছে। স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন বলেছেন, অন্যায়ভাবে কেউ কারও ভূমি দখল করলে কিয়ামতের দিন সেই ভূমি গলায় ঝুলিয়ে দেবেন। কোনো ভূমির বোঝা গলায় নিয়ে বয়ে বেড়ানো কি সম্ভব? বেনজীরের কী হলো, জেনারেল আজিজের কী হলো, আনার এমপি কয় টুকরো হলো- এসব আমাকে তেমন স্পর্শ করে না। কিন্তু আমার সমস্ত হৃদয় দেহমন উতালা হয়ে উঠে এসবে যে আমার বোন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষতি হচ্ছে, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, বাঙালি জাতির সর্বনাশ হচ্ছে। তাই আমি বড় বেশি উদ্বিগ্ন, চিন্তিত ও মর্মাহত। দেশে আইনের শাসন থাকলে, সামাজিক মূল্যবোধ থাকলে, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা থাকলেই আমি খুশি। আমি চাই সাধারণ মানুষের নিরাপদ সম্মানজনক জীবন। গরিব-দুঃখী-দরিদ্রের সন্তান-সন্ততিরা সুষ্ঠু পরিবেশে বড় হয়ে যে যার দায়িত্ব পালন করবে এটাই আমার একমাত্র প্রত্যাশা।

লেখক : রাজনীতিক

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর