বুধবার, ২৯ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি

কৃষি পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিন

রবিবার সন্ধ্যায় প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে প্রাণহানির সংখ্যা দুই অঙ্কে সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে এ ঘূর্ণিঝড় দেশের ১৯টি উপকূলীয় জেলায় যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা গত আড়াই দশকের ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ভয়াবহ। ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, রিমালের আঘাতে উপকূলীয় জেলাগুলো তছনছ হয়েছে। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, ফেনী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও যশোর জেলা। ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার সংখ্যা ১০৭ এবং ইউনিয়ন ও পৌরসভা ৯১৪টি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬। ৩৫ হাজার ৪৮৩টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২টি। উপকূলীয় এলাকাগুলোয় ৯ হাজার ৪২৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়। ওইসব আশ্রয় কেন্দ্র ও স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৮ লাখের বেশি লোক আশ্রয় নেন। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্যসহ প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত এদেশের মানুষ অসহায়ভাবে মরেছে একের পর এক বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। পাকিস্তানের সামরিক জান্তার কেউ দুর্গত এলাকার মানুষের দুর্দশা দেখার জন্য আসেনি। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মারা যায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৬৬ জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় এক কোটিরও বেশি মানুষ। অনেকে গত রবিবারের ঘূর্ণিঝড়কে ১৯৯১ সালের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এ তুলনায় সারবত্তা থাকলেও গত তিন দশকে দেশের সর্বত্র দালান কোটা গড়ে ওঠা, বেড়িবাঁধ এবং আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ জানমালের ক্ষয়ক্ষতি রোধে অবদান রেখেছে। এ ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি এবং ফসল নষ্ট হওয়ার ঘটনা লাখ লাখ মানুষের জীবনে দুর্ভোগ বয়ে এনেছে। যা মোকাবিলায় কৃষি পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়াসহ সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর