শুক্রবার, ৩১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ইসলামে ধূমপান ও তামাক, জর্দার বিধান

মুফতি রফিকুল ইসলাম আল মাদানি

ইসলামে ধূমপান ও তামাক, জর্দার বিধান

ক্ষতিকর ও অপবিত্র কিছু খাওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের গবেষণা মতে, তামাক জাতীয় দ্রব্য মারাত্মকভাবে শারীরিক বিপর্যয় টেনে আনে। এর কারণে মাথার চুল পড়া, চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হওয়া, যৌনশক্তি নাশ হওয়া, গর্ভপাত, মৃত শিশু জন্ম, অঙ্গ প্রত্যঙ্গে পচনশীল রোগ এবং মুখ, গলা, ফুসফুস ক্যান্সারের মারাত্মক ঝুঁকি থাকে। সিগারেটের প্যাকেটে লেখা থাকে, ধূমপান মৃত্যু ঘটায়। বাংলাদেশে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারজনিত রোগে মারা যান। মহান প্রভু ঘোষণা করেন, ‘তোমরা নিজেদের ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ কর না’ (সুরা বাকারা-১৯৫)। মহানবী (সা.) ঘোষণা করেন, ‘ইসলাম ক্ষতি করা ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সমর্থন দেয় না।’ (আহমদ)। পানের সঙ্গে জর্দা অথবা তামাক পাতা খাওয়াও ডাক্তারি গবেষণায় শারীরিক ক্ষতিকর। তাই এ থেকেও বিরত থাকা উচিত। আর কারও ক্ষেত্রে তা নিশ্চিতভাবে ক্ষতিকর প্রমাণিত হলে অবশ্যই তা না জায়েজ হিসেবে গণ্য হবে। এ ছাড়া সিগারেট, জর্দা ও গুল সবকিছুর মূলে রয়েছে একই জিনিস- তামাক পাতা। তাই গবেষক ডাক্তাররা জর্দা-গুল ইত্যাদি তামাক জাতীয় দ্রব্যকে পরোক্ষ ধূমপান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ডা. জাহাঙ্গীর এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, সুপারি এবং জর্দা দুটিতেই ক্যান্সারের মারাত্মক ঝুঁকি আছে। তামাক, জর্দা ও সিগারেটে রয়েছে নিকোটিনের মতো ক্ষতিকর বিষ। সুপারিতে আছে এরোকিন ও এরকোলিন এলকালয়েড, যা নিকোটিনের মতো ক্ষতিকর। এসব ক্যান্সার সৃষ্টি ছাড়াও অ্যাজমা, উচ্চ রক্তচাপ, বুকে ধড়ফড় বৃদ্ধি করতে পারে। বিড়ি-সিগারেট, তামাক পুড়িয়ে পান করা হয়, আর পানের সঙ্গে তামাক চিবিয়ে পান করা হয়।

ধূমপান করা ও তামাক জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করা বিভিন্ন কারণে নাজায়েজ হিসেবে গণ্য হয়। বিড়ি, সিগারেট, তামাক, জর্দা, গুল অপবিত্র ও দুর্গন্ধ জাতীয় জিনিস। আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল ও অপবিত্র জিনিস হারাম করা হয়েছে’ (সুরা আরাফ-১৫৭)। ধূমপায়ীর মুখের দুর্গন্ধে অন্য মানুষ কষ্ট পায়, যা পৃথক একটি পাপ। যারা ধূমপান করে এবং জর্দা খায় তারা বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও অন্যরা ঠিকই এর গন্ধে কষ্ট পায় ও বিরক্ত হয়। তামাক জর্দার চেয়ে অনেক কম দুর্গন্ধ. জাতীয় দ্রব্য, কাঁচা পিঁয়াজ ও রসুন খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করতে হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে।

লেখক : গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বসুন্ধরা, ঢাকা

সর্বশেষ খবর