শুক্রবার, ৩১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

রিমালের আঘাত

লাখ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন

সাম্প্রতিক প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় রিমালে লন্ডভন্ড হয়েছে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হানার পর প্রায় ৫০ ঘণ্টা বাংলাদেশে অবস্থান করে। এর মধ্যে ৩৬ ঘণ্টা ছিল দুর্দান্ত দাপটে। রিমাল ছিল সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ঝড়, যা অন্তত এক শতাব্দীতে দেখা যায়নি। এক্ষেত্রে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিসহ আরও কিছু কারণ আমলে নিয়ে গবেষণার পরামর্শ দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ঘূর্ণিঝড় রিমাল উপকূলে আঘাত হানার সময় এর কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠেছিল ঘণ্টায় ১১১ কিলোমিটার। তার ঝাপটায় স্বভাবতই উপকূলের বিশাল এলাকাজুড়ে ঘরবাড়ি, স্থাপনা, শস্য ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রাণহানি ঘটেছে ৩৯ জনের। ১৯ জেলায় প্রায় ২ লাখ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। সুন্দরবনসহ উপকূলের এ ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা সরকার ও ভুক্তভোগীদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে বিশেষ নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বিদ্যুতের ওপর। প্রাথমিক ধারণাতেই বিদ্যুৎ বিভাগের শতাধিক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৩ কোটি ৭ লাখ ৬২ হাজারেরও বেশি গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়। মহাবিপর্যয়ের মুখে পড়েন তারা। অসংখ্য খুঁটি উপড়ে যাওয়া এবং তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিপর্যয় ঘটে। নিরাপত্তার স্বার্থেও অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। আশার বিষয়, গত বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রায় ৯৩ শতাংশ এবং ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রায় ৮৭ শতাংশ গ্রাহকের পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়। তারপরও গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৯ লাখ ২২ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিলেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অন্তত ২৫ হাজার জনবল দিনরাত মাঠপর্যায়ে কাজ করছিলেন। আশা করা যায়, এর মধ্যেই অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে এবং দ্রুতই শতভাগ গ্রাহকের ঘরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ফিরে আসবে।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর