রবিবার, ২ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

ক্ষমতাহারা আমেরিকার ক্রাউলি বাংলাদেশের আজিজ বেনজীর

নঈম নিজাম

ক্ষমতাহারা আমেরিকার ক্রাউলি বাংলাদেশের আজিজ বেনজীর

জোসেফ ক্রাউলি ছিলেন আমেরিকান সংসদের প্রভাবশালী সদস্য। তিনি বারবার নির্বাচিত হতেন। বাংলাদেশ ও ভারতের ককাস চেয়ারম্যান হিসেবে আলাদা পরিচিতি ছিল। সর্বশেষ নির্বাচনে তিনি আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্তেজ নামে কম বয়সি একটি মেয়ের কাছে ভোটে হারলেন। বিজয়ের সময় আলেকজান্দ্রিয়ার বয়স মাত্র ২৮ বছর। পড়াশোনা শেষে তিনি একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন। তার কাছেই ধরাশায়ী হলেন ক্রাউলি। ভোট শেষে ক্রাউলির অফিসে শোকের ছায়া নেমে আসে। ভেঙে পড়েন তার সঙ্গে কর্মরত সবাই। ক্রাউলি সবার দিকে তাকালেন। বুঝলেন সবার মনোভাব। তারপর একটি গিটার হাতে নিলেন। টুংটাং করে সবাইকে গান শোনালেন। গান শেষে সবাই করতালি দিলেন। শোকের ছায়া কিছুটা কমল। ক্রাউলি বাড়ি ফিরলেন। অন্য সহকর্মীরাও চলে গেলেন বিষাদের ছায়া নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত কংগ্রেসম্যান জোসেফ ক্রাউলি এখন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। রাজনীতি থেকে অনেকটা অবসরে গেছেন। জীবনের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা ক্ষমতার অতীতকে বেছে নিয়েছেন শুধু নিজের স্মৃতি হিসেবে। হয়তো বই আকারেও লিখবেন কিছু ঘটনা।

জোসেফ ক্রাউলির অফিসে গিয়েছিলাম অনেক দিন আগে। তখন তিনি ভীষণ ক্ষমতাবান কংগ্রেসম্যান। তার সচিবের ক্ষমতারও শেষ ছিল না। বাংলাদেশ ও ভারতের রাজনীতি সম্পর্কে ধারণা রাখতেন ক্রাউলির সচিব। প্রথম সাক্ষাতে ভদ্রমহিলার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির অন্দরমহল নিয়ে আলাপ করলেন। কিছুদিন আগে নিউইয়র্কে একটি ক্যাফেতে গিয়েছিলাম কফি খেতে। এ ক্যাফের সুবিধা হলো, এক কাপ কফি নিলে আপনি চাইলে আবার রিফিল দেবে। হঠাৎ ক্যাফের ম্যানেজার মহিলাকে চেনা চেনা লাগল। ভদ্রতাবশত প্রশ্নটা করতে পারছিলাম না। ম্যানেজার নিজেই কফির পেয়ালা নিয়ে এলেন। এ দেশে ম্যানেজার, কর্মচারী সবাই সমানভাবে কাজ করেন। কাজের ছোটবড় নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। সবাই নিজের কাজটা মন দিয়ে শেষ করে বাড়ি ফেরেন। হাসিখুশি প্রাণবন্ত ভদ্রমহিলা নিজেই গল্প জুড়লেন। পাশে থাকা সাংবাদিক লাবলু আনসার বললেন, কি চেনা চেনা লাগছে ওনাকে? জবাবে হ্যাঁ বলতেই তিনি বললেন, দেখেছেন তাকে আগে। তিনি একসময় জোসেফ ক্রাউলির সচিব ছিলেন। আমরা দুজন একসঙ্গে গিয়েছিলাম ক্রাউলির অফিসে। তখন খুব গর্জিয়াস লেগেছিল। ক্ষমতার বাইরে থাকায় এখন হয়তো ম্লান।

পৃথিবীর সব দেশেই ক্ষমতার দুনিয়া এক রকম। ক্ষমতা হারানোর পর আরেক। ক্ষমতা হারানো বাংলাদেশের দুই সাবেক প্রধানকে নিয়ে এখন সবখানে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। তাদের ক্ষমতার ব্যবহার, অপব্যবহার হুট করে হয়নি। দুজনই দুটি বাহিনীর প্রধান ছিলেন। সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। একটা সময় তাদের সঙ্গ পেতে মানুষের জটলা ছিল। এখন কেউ পক্ষে কিছু বলছে না। পুলিশ ও প্রশাসনে অনেক বেনজীর আছেন। সরকারি উচ্চ পর্যায়ে বসে তারা ব্যবসাবাণিজ্য করেন। দোষ শুধু একজনের নয়। বাণিজ্য যারা করছেন তাদের সবাই চিহ্নিত হলে মুশকিল হয়ে যাবে। আমার দাদি বলতেন, সুসময়ে সবাই, অসময়ে হায় কেউ কারও নয়। ভালো সময়ের দুধের মাছির অভাব নেই। পাশে এখন আর কেউ দাঁড়াবে না। তাদের সঙ্গে সেলফি তুলে দেবে না সামাজিক মাধ্যমে। এখন সবাই তাদের সমালোচনা করবে। ক্ষমতায় থাকার সময় দুই দিন আগে যারা আনুকূল্যের জন্য ঘুরত এখন তারা দূরে যাবে।

দুনিয়াটাই বড় অদ্ভুত। দুই দিনের ক্ষমতার দুনিয়াতে খারাপ সঙ্গ সর্বনাশ করে ছাড়ে। একবার আফ্রিকান একটি দেশের বিমানবন্দরে হুলুস্থুল পড়ে গেল। অবৈধভাবে সঙ্গে রাখা ২ কেজি সোনাসহ ধরা পড়লেন রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থার বিমানবালা। আটকের পর রিমান্ডে পুলিশ কর্মকর্তা তার কাছে জানতে চাইলেন, তুমি কত দিন থেকে এ কাজ করো? জবাবে সেই মেয়েটি বলল, যত দিন থেকে চাকরি করছি। প্রতিবারই বিদেশ গেলে আমাদের সব সহকর্মী ডায়মন্ড ও সোনা বহন করে। আপনারা গোপন সংবাদের সূত্র নিয়ে ধরলেন শুধু আমাকে। সোনা বহনের কথা জানত দুই সহকর্মী বান্ধবী। তারা কি খবর দিয়েছে আপনাদের? জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা বললেন, কারা খবর দিল জানে কাস্টমস গোয়েন্দারা। তাদের কথা জানতে চাইছো কেন? জবাবে মেয়েটি বলল, স্যার, আমার অন্য বান্ধবীরা এনেছিল ডায়মন্ড। আমি এনেছি সোনা। নিজেরা নিরাপদে পথ পার হতে তারা আগেই কাস্টমসের সোর্স হলো। ফাঁসিয়ে দিল আমাকে। বিমানবন্দরের সব সংস্থা আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হলো। মিডিয়া দৌড়ে এলো। আপনারা সবাই বাহবা নিচ্ছেন। সেলফি তুলছেন। সে সুযোগে ডায়মন্ড বহনকারী সবাই নিরাপদে গ্রিন চ্যানেল পার হলো। পুলিশ কর্মকর্তা জানতে চাইলেন, এ সোনা কার জন্য আনলে? জবাবে বিমানবালা বলল, আপনাদের পুলিশপ্রধানের স্ত্রীর জন্য এনেছি। পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা কৌতূহলী হলেন। জানতে চাইলেন, তোমার বান্ধবীরা কার জন্য এনেছিল ডায়মন্ড? জবাবে বিমানবালা বলল, হয়তো আরও ওপরের অন্য কারও জন্য। পুলিশ কর্মকর্তা দেখলেন, কেঁচো খুঁজতে সাপ টেনে লাভ নেই। ধরা সবাই পড়ে না। কেউ কেউ পড়ে। নিয়তি তাদের টেনে নেয়।

পুলিশের ডিআইজি মিজান এখন কারাগারে। আরও অনেক মিজান আছেন। তাদের খবর সব সময় সামনে আসে না। আসবেও না। সরকারি বড় পদে চাকরি করে সরাসরি ব্যবসাবাণিজ্য করছেন অনেকে। অনেক বড় সাহেব ভুলে যান পেশাদারির কথা। রাষ্ট্রক্ষমতায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের কারও হুট করে অহংকার বাড়লে প্রশ্ন তৈরি হয়। একজন ব্যবসায়ী বলেছিলেন, অতিরিক্ত ক্ষমতা ও অর্থ সরকারি কর্মকর্তাদের অহংকারী করে তোলে। দাম্ভিক হয়ে ওঠেন তারা। জড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ডে। গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। উন্নত বিশ্বে আমাদের অনেক আমলার সম্পদ আছে। শুনেছি, দেশে নাকি অনেকে ঘুষ নেন ডলার-ইউরোতে। তাদের ঘরবাড়ি সার্চ করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। রাজনীতিবিদদের জবাবদিহি আছে। জনগণের মুখোমুখি হতে হয়। আমলাদের জবাবদিহি নেই। কারণ তারা রাজনীতিবিদদের মান্য করতে চান না। ভাব দেখান রাজনীতিবিদরা তাদের কারণে টিকে আছেন।

জটিলতা, প্রশ্ন সবখানে আছে। তার পরও রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় গিয়ে ব্যবসাবাণিজ্য করলে কর্মীরা ভাগ পায়। প্রতিদিন একজন রাজনীতিবিদকে দলের নেতা-কর্মীর খেয়াল রাখতে হয়। তাদের ব্যবসাবাণিজ্য দিতে হয়। হাসপাতালে গেলে খরচ দিতে হয়। ভোটের সময় দুই হাতে খরচ করতে হয়। আর সবচেয়ে বেশি জটিলতায় পড়তে হয় অংশগ্রহণমূলক ভোটে। শুধু কর্মী নয়, জনগণেরও মুখোমুখি হয়ে জবাবদিহি করতে হয়। সাত-পাঁচের হিসাব না মিললে ক্ষমতা শেষ। আমলাদের ক্ষমতা অপরিসীম। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দেশের ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কিছু ক্ষতি হয়েছে আমলাদের মাধ্যমে। তখন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মধ্যে একটা অহংকার তৈরি হয়েছিল। ভোটের পর আসলে এ বাস্তবতা ছিল না কোথাও। কঠিন সত্য হলো, অতি উৎসাহী কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্যতে তখন কালিমা দিয়েছিলেন। যার কোনো দরকার ছিল না। আওয়ামী লীগের গ্রাম পর্যায়ে সাংগঠনিক কাঠামো অনেক শক্তিশালী।

২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ ছিল উজ্জীবিত একটি রাজনৈতিক দল। শেখ হাসিনা শক্তিশালী একজন প্রধানমন্ত্রী। বিপরীতে বিএনপির কোনো সাংগঠনিক অবস্থান ছিল না কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যায়ে। ২০১৪ সালে ভোটে না যাওয়ার কঠিন খেসারত তাদের দিতে হয়েছিল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে ছিলেন। তারেক রহমান লন্ডনে। দলের সর্বস্তরের নেতারা কাবু ছিলেন আগুনসন্ত্রাসের মামলায়। বেশির ভাগ নেতাই কারাগারে ছিলেন। যারা বাইরে ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ১০ থেকে ১২টি মামলা ছিল। আদালতে সময় দেওয়া নিয়েই সবাই ব্যস্ত ছিলেন। অনেকের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল মামলা ও সাজার কারণে। তারা ঠিকভাবে প্রচারে নামতে পারছিলেন না। সে সময় সরকারি দলকে জুজুর ভয় দেখানো ছিল দুর্ভাগ্যজনক। অনেক ডিসি-এসপি তখন রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে ভোটের খরচ নিয়েছিলেন প্রকাশ্যে। মাঠের প্রভাব কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের মাঝেও পড়েছিল। সরকারি কর্মকর্তারা দম্ভ নিয়ে মাঠের নেতাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিলেন, যা ছিল দুর্ভাগ্যজনক। তখন শতভাগ নিরপেক্ষ ভোট হলে বিএনপি কত আসন পেত? তারা কি ক্ষমতায় আসার পর্যায়ে ছিল? আবারও বলছি, শতভাগ নিরপেক্ষ ভোটে বিএনপি ৫০টির বেশি আসন পাওয়ার অবস্থানে ছিল না ২০১৮ সালের নির্বাচনে।

সরকারি কর্মকর্তারা জানেন, তার পরও বলছি, আওয়ামী লীগ গণমানুষের রাজনৈতিক দল। এ দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মওলনা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল দলটি। এখন এ দলের নেতৃত্বে শেখ হাসিনা। তিনি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে। জন্মের পর থেকে রাজনীতি দেখে বড় হয়েছেন। এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা রাজনীতিবিদ তিনি। ১৯৮১ সাল থেকে টানা একটি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সফলতা নিয়ে। দূরদর্শিতা, সফলতা, বিচক্ষণতার প্রমাণ তিনি বারবার দিচ্ছেন বিশ্ববাসীর কাছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শেষ ঠিকানা শেখ হাসিনার এখনকার চ্যালেঞ্জ অন্যবারের চেয়ে আলাদা। সরকারি কর্মকর্তারা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে রাষ্ট্রের স্বাভাবিকতা ইতিবাচকভাবেই সামনের দিকে যায়। কোনো ধরনের ঝামেলা তৈরি হয় না। ইতিহাস ইকবাল করিম ভূঁইয়া, নুর মোহাম্মদদের নাম মনে রাখবে। তারাও দায়িত্বরত অবস্থায় কঠিন বাস্তবতা সামাল দিয়েছিলেন বিতর্ক ছাড়া, পেশাদারি নিয়ে।

আমাকে একজন সাবেক কর্মকর্তা বললেন, বেনজীর আহমেদ কি সরকারি দলের জন্য কিছুই করেননি? জবাবে বললাম, অবশ্যই করেছেন। হেফাজতের শাপলা চত্বর কাণ্ডের সময় তার একটা বড় অবদান ছিল। তিনিও সেই সংকট দূর করতে ভূমিকা রেখেছিলেন। হেফাজতকাণ্ডের সময় র‌্যাবের জিয়ারও ভূমিকা ছিল। জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় তাদের সাহসী ভূমিকায় দেখেছিলাম। এখনকার ডিবিপ্রধান হারুন ছিলেন লালবাগের ডিসি। তিনি বাবুনগরীকে আটক করেছিলেন। বড় হুজুরকে বিমানে তুলে পাঠিয়ে ছিলেন চট্টগ্রামে। সে সময় একজন রাজনীতিবিদও সামনে এসেছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ। তিনি কঠিন ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন। বলেছিলেন, রাষ্ট্রে কাউকে বিশৃঙ্খলা করতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনার সরকার কঠোরভাবে সবকিছুর মোকাবিলা করবে। সৈয়দ আশরাফের বক্তব্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করেছিল। পরদিন তারা সারা দেশে মিছিল বের করেছিল। রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার। কেউ আইনবহির্ভূত কাজ করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সে ব্যবস্থা যিনি গুরুত্বপূর্ণ পদে অবস্থান করবেন তাকেই করতে হবে।

ক্ষমতায় থাকাকালে রাষ্ট্রের অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করলেই চলে সরকারি কর্মকর্তাদের। এতে দেশ ও সরকার উপকৃত হয়। ২০১৪ সালে সেনাপ্রধানের দায়িত্বে ছিলেন ইকবাল করিম ভূঁইয়া। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সবচেয়ে জনপ্রিয় অফিসারদের একজন তিনি। জীবনে শুনিনি ইকবাল করিম ভূঁইয়া আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলেছেন। তিনি ছিলেন একজন পেশাদার কর্মকর্তা। সে সময় সংবিধানের অর্পিত দায়িত্ব তিনি নিরপেক্ষভাবে পালন করেছিলেন। অনেকেই ভেবেছিলেন তিনি বিপথগামী হবেন। হননি। জাতীয় পতাকার সম্মানে শতভাগ স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা নিয়ে কাজ করেছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। ইকবাল করিম প্রশংসিত মর্যাদার আসনে ছিলেন এবং আছেন, থাকবেন। ঠিক একইভাবে পুলিশের একজন দক্ষ কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদের প্রশংসা সবখানে হয়। আমি কারও বিপক্ষে বলছি না। ২০১৮ সালে একজন মেজর জেনারেল আক্ষেপ করে বলেছিলেন, সরকারের পক্ষে থাকা আমাদের দায়িত্ব। আজিজ সাহেব আমাদের ক্ষতি করছেন। যার খেসারত দিতে হবে। দূরদর্শী সেই কর্মকর্তা এখন অবসরে। বিভিন্নমুখী প্রতিকূলতার কারণে বেনজীর আহমেদ, আজিজ আহমেদ এখন একটা বিতর্কে পড়েছেন। এ বিতর্ক তাদের নিজেদের তৈরি করা। এর দায়ভার কেউ নেবে না। ইতিহাস সব সময় এমন নিষ্ঠুরই হয়। আর রাষ্ট্র তার নিজস্ব গতিতে সামনের দিকে চলে। এ গতি চাইলেও থামানো যায় না। কেউ থামাতে পারে না। জোর করে থামানোর চেষ্টাও ভালো হয় না।

লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন

সর্বশেষ খবর