শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতি

ধনী-গরিবের বৈষম্যও বাড়ছে

মূল্যস্ফীতি দেশের মানুষের মাথাব্যথার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনীতির জন্যও তা বিপদ হয়ে বিরাজ করছে দুই বছরের বেশি সময় ধরে। মূল্যস্ফীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমজনতা। তারা তাদের সীমিত আয় দিয়ে এ দানবের মোকাবিলায় অসহায়বোধ করছেন। সোজাসাপ্টাভাবে বলা যায় সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি। এটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কি যাবে না তার ওপর তাদের গ্রহণযোগ্যতাও অনেকখানি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। দুই বছর ধরে কভিড আগ্রাসন মোকাবিলায় বাংলাদেশ বাদবাকি দুনিয়ার চেয়ে সাফল্য দেখালেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিণতিতে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে বিপর্যয় ঘটেছে তার সাক্ষাৎ শিকারে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশও। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক সিপিডির ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি : তৃতীয় অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনা শীর্ষক প্রেস ব্রিফিংয়ে মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে বলেছেন, এ মুহূর্তে অর্থনীতি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে এবং দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি একটি বড় ধরনের চাপের মধ্যে রয়েছে। এ পরিস্থিতি শুরু হয়েছে কভিডের সময়, পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অব্যাহত রয়েছে। অনিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতিই এ সময়ের বড় ব্যর্থতা। দেশে ৯ থেকে ১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। যা শ্রীলঙ্কার চেয়েও বেশি। ২০১৯ সালের তুলনায় মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে ১৭ ভাগ, পাইজামের দাম ১৫ ও মোটা চাল ৩০ ভাগ। অর্থাৎ মুনাফাখোররা বেশি লাভ যেখানে করছে, যে পণ্য গরিব ও মধ্যবিত্তরা ব্যবহার করে এবং বাজারে বেশি বিক্রি হয়। ২০১৯ সাল থেকে খাদ্যমূল্য বিবেচনা করলে অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতির কবলে সাধারণ মানুষ। আয় কম, কিন্তু খাবারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। যার ভুক্তভোগী গরিব ও সাধারণ মানুষ। ধনী ও গরিবের বৈষম্য বাড়ছে। জিডিপিতে জাতীয় আয় বাড়ছে, কিন্তু কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখতে পারছে না। ধনী ও গরিবের বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপকভাবে। সিপিডির মূল্যায়ন বাস্তবসম্মত ও প্রাসঙ্গিক। মূল্যস্ফীতির কারণে গত দেড় দশকে দেশে যে দৃষ্টিকাড়া উন্নতি হয়েছে সে সাফল্য নিষ্প্রভ হয়ে পড়ছে। নিজেদের স্বার্থেই সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যত্নবান হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর