বুধবার, ৫ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সুন্দরবন সুরক্ষা

পরিকল্পনা বাস্তবায়নই চ্যালেঞ্জ

ইউনেস্কোর বিশ্বঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন পড়েছে অগ্নিঝুঁকির মুখে। গবেষণা সূত্রে প্রকাশ, ২০০১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে অন্তত ২৪টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে। গত ৪ মে বনের আমরবুনিয়া এলাকায় যে আগুন লাগে, সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের কর্মীদের সমবেত চেষ্টায়ও তা নেভাতে দুই দিন লেগে যায়। এতে প্রায় ৮ একর ম্যানগ্রোভ বনের ক্ষতি হয়। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে সুন্দরবনের অগ্নিঝুঁকি মোকাবিলা এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলা হচ্ছে, মানবসৃষ্ট কারণেই অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য সরকার সুন্দরবন রক্ষায়, বিশেষ করে এখানে অগ্নিদুর্ঘটনা কমাতে একটা কার্যকর গাইডলাইন তৈরি করতে যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক বৈঠকের সুপারিশের ভিত্তিতে কর্ম-পরিকল্পনা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগেও সুন্দরবন রক্ষায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু সেসব সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নি বলেই এ নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে যে, পরিকল্পনা বাস্তবায়নই চ্যালেঞ্জ। অথচ বিভিন্ন সম্পদ আহরণের মাধ্যমে সুন্দরবনের ওপর আশপাশের লাখ লাখ অধিবাসী নির্ভরশীল। জাতীয় অর্থনীতিতেও এর অবদান অনস্বীকার্য। সুন্দরবনে মাছ শিকারি, কাঠ সংগ্রহকারী, মধু সংগ্রহকারীদের নিত্য চলাচল। এদেরই অসাবধানতায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো ঘটে বলে সাধারণভাবে ধারণা করা হয়। কিন্তু এর পেছনে নাশকতার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। চোরা শিকারিরা বনবিভাগের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে ফায়দা লোটার জন্য অনেক সময় আগুন লাগিয়ে দেয়। দুর্বৃত্তদের এটা একটা অপকৌশল। কিন্তু এদের ঠেকাতে প্রয়োজনীয় জনবলের ঘাটতি রয়েছে বন বিভাগে। প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্পসংখ্যক কর্মী নিয়ে এত বড় গহিন বনের সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষায় তারা স্বভাবতই গলদঘর্ম, হিমশিম। পর্যাপ্ত যানবাহন, পর্যবেক্ষণের আধুনিক প্রযুক্তিরও অভাব রয়েছে। এসব ঘাটতি পূরণ করা জরুরি। না হলে কীভাবে বাঁচবে সুন্দরবন?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর