শনিবার, ৮ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী

বিনিয়োগবান্ধব পদক্ষেপ নিন

বাংলাদেশের মতো চতুর্মুখী সমস্যাক্রান্ত দেশে প্রতিটি সরকার নিজেদের স্বার্থেই জনবান্ধব বাজেট প্রণয়নের চেষ্টা করে। কারণ অন্য সবার মতো যারা দেশ চালান তারা অতি অবশ্যই জানেন, দেশের মানুষ স্বস্তিতে থাকলে সরকারও স্বস্তিতে থাকে। এটি এমনই এক স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম যা উপেক্ষার কথা বাজেট প্রণয়নকারীরা ভাবেন না বলেই আমাদের বিশ্বাস। তবে সাধ ও সাধ্যের ব্যবধান সবসময় ছিল এবং এখনো রয়েছে। সে সীমাবদ্ধতার প্রতিফলন ঘটেছে বাজেটে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাজেটে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হতে পারে। বিনিয়োগের গতি শ্লথ হলে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সুফল মিলবে না। গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশের যে দৃষ্টিকাড়া অগ্রগতি তা ঘটেছে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণে। ‘বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’ এ বাংলা প্রবচনকে ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রাধান্য দেওয়ার কারণে। প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রের কর অব্যাহতি প্রত্যাহার করা হয়েছে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির অভিলাষে। রাজস্ব বাড়ুক তা আমরাও চাই। এ জন্য বন্ধ করতে হবে কর ফাঁকির সব সুযোগ। দ্বিতীয়ত, অন্তত ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ যারা কর দেওয়ার যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও কর দেন না, তাদের করের আওতায় আনতে হবে। সে পথে না গিয়ে শিল্প-কলকারখানা স্থাপনে কর অব্যাহতি দানের কৌশল প্রত্যাহার করলে হীতে বিপরীত হবে কি না বাজেট পাসের আগে ভাবতে হবে। দ্বিতীয়ত, বাজেট ঘাটতি পূরণে সরকার ঢালাওভাবে ব্যাংক ঋণ নিলে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় বিশেষ করে শিল্প স্থাপনে বেসরকারি উদ্যোক্তারা ঋণ অভাবে ভুগবেন কি না ভেবে দেখা উচিত। সরকার তার প্রয়োজনে ব্যাংক ঋণ নেবেন তাতে কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। দুনিয়ার অতি সমৃদ্ধ দেশগুলোও সে পথে হেঁটে থাকে। তবে সত্যিকার ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা যাতে সময়মতো ঋণ পান তার নিশ্চয়তা বিধানের উদ্যোগ নিতে হবে। ঋণ খেলাপিদেরও ধরতে হবে হাতে ছাই দিয়ে। এ ক্ষেত্রে কোনো হেলাফেলা থাকা উচিত নয়।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর