মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

গরুর ট্রাকে চাঁদাবাজি

কর্তাদের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

ঈদুল আজহার আগে প্রতি বছরই গরুবোঝাই ট্রাক আর চাঁদাবাজি সমার্থক হয়ে দাঁড়ায়। এবার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছিল গরুবোঝাই ট্রাক কোনোভাবে থামানো যাবে না। পণ্যবাহী ট্রাকের ক্ষেত্রেও যাতে চাঁদাবাজি না হয় সেজন্য সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কথায় বলে চোরা নাহি শোনে ধর্মের কাহিনি। ফলে সারা দেশে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে পুলিশের হাঁকডাকের মধ্যেও বন্ধ নেই গরুবোঝাই ট্রাকে চাঁদাবাজি। বিভিন্ন পয়েন্টে চাঁদাবাজি চলছে বেপরোয়াভাবে। এসব পয়েন্টে কখনো পুলিশের নাম আবার কখনো পুলিশের সোর্সের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। ঢালাও চাঁদাবাজিতে অসহায় গরুবোঝাই গাড়ির চালক ও গরু ব্যাপারীরা। গরুবোঝাই প্রতিটি ট্রাক কক্সবাজার থেকে ঢাকায় যেতে বিভিন্ন পয়েন্টে চাঁদা দিতে হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। একইভাবে উত্তরাঞ্চল থেকে চট্টগ্রামে গরু আনতে গুনতে হচ্ছে ১০-১৫ হাজার টাকা। মিয়ানমার ও ভারতীয় গরুর ট্রাককে বেশি টার্গেট করে সংশ্লিষ্টরা। দেশি গরুর ট্রাকে কিছুটা শিথিলতা থাকলেও ভারত ও মিয়ানমারের গন্ধ পেলে চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা না পেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়, হুমকি দেওয়া হয় মামলার। ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের ১০টির বেশি পয়েন্টে চাঁদাবাজি চলছে। এসব পয়েন্টে প্রতিটি গরুবোঝাই গাড়িকে গুনতে হয় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। একইভাবে দেশের খুলনা, নেত্রকোনা, রংপুরসহ অন্যান্য জেলা থেকে গরুবোঝাই ট্রাক চট্টগ্রামে আসার পথে টাকা আদায় করছে পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি পিছিয়ে নেই রাজনৈতিক টাউট ও এলাকাভিত্তিক মাস্তানরাও। ফলে ঈদে গরুর দাম বৃদ্ধিতে তা মদত জোগাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চলতি বছর ঈদুল আজহার কোরবানির চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে গরু আমদানির কথা থাকলেও দেশে চাহিদার চেয়ে বেশি গরু মজুত আছে এমন যুক্তি তুলে সরকারকে নিরস্ত করে গরু খামার মালিকরা। ফলে গরুর হাটে এবার আকাশচুম্বী দাম হাঁকতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। দাম বৃদ্ধির এ মচ্ছবে উৎসাহ জোগাচ্ছে গরুবোঝাই ট্রাকে চাঁদাবাজির ঘটনা। চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে যারা হাঁকডাক দিয়েছেন তারা কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জেগে উঠলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।

সর্বশেষ খবর