মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

স্ট্রিট ফুডে জীবাণু

যথেচ্ছ নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিন

স্ট্রিট ফুড অর্থাৎ রাস্তার পাশে বিক্রি হয় এমন মজাদার খাদ্যে আসক্তি নেই এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। যারা হরহামেশাই জেনেশুনে এসব খাদ্য কিনে খান তাদের জন্য হতাশাজনক তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। তাদের গবেষণায় বলা হয়েছে, চটপটি, ঝালমুড়ি, আখের রসসহ রাজধানীর রাস্তার পাশে বিক্রি হওয়া ছয় ধরনের খাবারে মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত এশেরিকিয়া কোলাই, সালমোনেলা এসপিপি ও ভিব্রিও এসপিপি ব্যাকটেরিয়া। এসব খাবার খেয়ে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে ভুগছে মানুষ। গত রবিবার গবেষণার ফলাফল অবহিতকরণ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড নিউট্রেশন অ্যান্ড এগ্রিকালচার রিসার্চ ল্যাবরেটরি ও গবেষণা দলের প্রধান ড. মো. লতিফুল বারি। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, এসব স্ট্রিট ফুড খেয়ে প্রতি ১০ হাজার মানুষে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়ার কারণে দুজন, সালমেনোলা ব্যাকটেরিয়ার কারণে চারজন ও ভিব্রিও ব্যাকটেরিয়ার কারণে একজন অসুস্থ হচ্ছেন। দূষিত পানি, নোংরা গামছা, অপরিষ্কার হাত, ধুলাবালিময় পরিবেশের কারণে নানা ধরনের জীবাণু খাবারে মিশে যাচ্ছে। বিক্রেতাদের স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন সম্পর্কে জ্ঞান ও ধারণা কম থাকায় খাবার এবং জুসে জীবাণু ঢুকছে। সড়কের বিভিন্ন খাবার খেয়ে মানুষ ই-কোলাই, সালমেনোলা ও ভিব্রিওর মতো জীবাণুতে সংক্রামিত হচ্ছে। স্ট্রিট ফুড নিরাপদ করতে বিক্রেতাদের প্রশিক্ষণ ও এ বিষয়ে মনিটরিংয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে বিএফএসএর পক্ষ থেকে। দুনিয়ার প্রায় সব দেশেই কমবেশি স্ট্রিট ফুডের কদর রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের মতো যেনতেনভাবে খাদ্যপণ্য বিক্রির দ্বিতীয় কোনো নজির নেই বললেই চলে। যথেচ্ছতা বন্ধে বিএফএসএ শুধু নয়, দুই সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও সক্রিয় করা দরকার। প্রশিক্ষণ ছাড়া স্ট্রিট ফুডের ব্যবসা যাতে না করা যায় সেটি নিশ্চিত হলে এবং নিয়মিত মনিটরিং হলে এক্ষেত্রে যে যথেচ্ছ চলছে তার অবসান ঘটাবে। মানুষ খাদ্য খায় পুষ্টির উদ্দেশ্যে। কিন্তু তার বদলে রোগাক্রান্ত হবে তা কোনো অবস্থায় প্রত্যাশিত নয়। আমরা আশা করব, বিএফএসএর পরামর্শগুলো সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় আনবেন।

সর্বশেষ খবর